মাকে কুপিয়ে হত্যা, পিতা কারাগারে, শিশু পুত্র রোহানের কান্না থামাবে কে

দেড় বছরের শিশু রোহানের কান্না থামছে না। সব সময় শিশুটি কান্নাকাটি করে। মাদক মামলায় পিতা রমজান আলী কারাগারে। আর মা রহিমা খাতুন রাফেজাকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। একান্ত আপন বলতে রোহানের আর কেও নেই।কখনও ফুফু, কখনও নানী আবার কখনও পুলিশ কর্মকর্তারা কোলে তুলে নিয়ে আদর করছেন। নানা-মামার কাছেও আদরের কমতি নেই। তারপরও শিশু রোহানের শান্তনা মিলছে না। এখন কে তাকে শান্তনা দিবে ? কার আদরে রোহানের প্রাণটা জুড়াবে ? এমন হাজারো প্রশ্ন তার স্বজনদের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।     এদিকে শিশুটি সারাক্ষন কান্নাকাটি করাতে বাড়ির মানুষ এমনকি পাড়া প্রতিবেশিরা পর্যন্ত ঘুমাতে পারছেন না। শিশু রোহান ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বদ্দিপুর কৃষ্ণপুর গ্রামের রমজান আলীর একমাত্র ছেলে। ৫ বছর আগে একই গ্রামের রহিমা খাতুন রাফেজাকে বিয়ে করেন রমজান আলী। রাফেজার ভাই সেলিম রেজা জানান, তার ভগ্নিপতি রমজান আলী গ্রামের কতিপয় মানুষের সঙ্গে মিশে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। চলতি বছরের গত ফেব্রুয়ারি মাসে পুলিশ একটি মাদক মামলায় রমজানকে কারাগারে পাঠায়। রমজান আলী এখন কারাগারে। এদিকে স্বামী কারাগারে যাওয়ার পর শিশু সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতেই দিন কাটাচ্ছিলেন রাফেজা। গত ১৬ মে রাতে কে বা কারা বাড়িতে প্রবেশ করে ধারালো অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে রাফেজাকে হত্যা করে। ঘটনার রাতে রাফেজা ছেলেকে নিয়ে স্বামীর ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। দুবৃত্তরা কেন তাকে হত্যা করেছে তা নিয়ে অন্ধকারে রয়েছে পুলিশ।
তবে ধারণা করা হচ্ছে ধর্ষনে ব্যর্থ হয়ে বা চিনে ফেলার কারণে রাফেজাকে হত্যা করা হতে পারে এমন কথা গ্রামের মানুষ মুখে মুখে প্রচার পাচ্ছে। এ ব্যাপারে রাফেজার পিতা নূর মোহাম্মদ বাদী হয়ে মহেশপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ সামাউল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেপ্তারও করেছে। শিশুটির নানা নুর মোহাম্মদ জানান, রাফেজাকে হত্যার পর থেকেই রোহানের কান্না থামছে না। দিনে রাতে একভাবে সে কান্নাকাটি করে। তার নানী, ফুফু, খালা, মামা এমনকি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ একাধিক পুলিশ কর্মকর্তাও তার বাড়িতে এসে শিশুটিকে আদর করে যাচ্ছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহেশপুর থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল আলম জানান, ঘটনার পরই তারা একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছেন। সে নিজেকে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা জানিয়ে অন্যদের নাম প্রকাশ করেছেন। যা গ্রেপ্তারের স্বার্থে বলা যাচ্ছে না। এবিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোর্শেদ হোসেন খান জানান ঘটনার মোর্টিভ উদ্ধারের জোর প্রচেষ্টা চলছে। কিছু দিনের মধ্যেই মাডারের মূল রহস্য উদঘাটন করা যাবে