তালায় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ টিআরএম প্রকল্পের বাঁধ মেরামত হয়নি আজও,আতঙ্কিত এলাকাবাসি

মসজিদ মন্দির ও শতাধিক বাড়ি সহ বিস্তীর্ন এলাকা প্লাবিত,
প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্ফান তান্ডবের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ সাতক্ষীরার তালার টিআরএম প্রকল্পের বাঁধ মেরামতের ব্যবস্থা না হওয়ায় আতঙ্কিত এলাকাবাসি। ফলে জোয়ারে পানি বৃদ্ধিতে প্রতিনিয়ত বাঁধ ভেঙ্গে মাধবখালীর খাল উপচে পানি প্রবেশ করে মসজিদ মন্দির সহ এলাকার শতাধিক বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে মাছের ঘের, পুকুর ও নিম্নাঞ্চল।

উল্লেখ্য, গত ২৫ মে আম্ফানে টিআরএম প্রকল্পের  ভেঙ্গে যাওয়ায় বাঁধ সংস্কার ও জমির মালিকদের ক্ষতি পুরনের দাবিতে এক সমাবেশ ও মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ মে সকাল ১১ টায় তালা উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক মত বিনিময় সভায় দ্রুত বাঁধ সংস্কার সহ ক্ষতি পূরনের ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে ও ১৮ দিন অতিবাহিত হলে ও অদ্যবধি কোন সুব্যবস্থা না হওয়ায় এলাকাবাসি চরম আতঙ্কের মধ্যে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে।প্লাবিত এলাকার জন সাধারন পায় নি কোন সরকারি সহায়তা।পরবর্তীতে

মত বিনিময় শেষে স্থানীয় সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস,এম মোস্তফা কামাল, যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো তাওহিদুর রহমান, তালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, সহকারী কমিশনার ভূমি রবিউল ইসলাম, তালা থানার ওসি মেহেদী রাসেল সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুত বাঁধটি সংস্কারে আশ্বাস দেন। আশ্বাসের ১৮ দিন পার হলেও বাঁধ মেরামতের কার্যকর কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এদিকে কপোতাক্ষ নদের জোয়ারের পানির চাপে প্রতিনিয়ত নতুন করে টিআরএম’র বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে স্থানীয় গুচ্ছগ্রামের ৪৫টি বাড়ি, মসজিদ, মন্দিরসহ এলাকার শতাধিক বাড়ি প্লাবিত সহ প্লাবিত এলাকার সংখ্যা বাড়ছে। পানিতে ভেসে গেছে মাছের ঘের, পুকুর ও নিম্নাঞ্চল। পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়ির উঠোন, টিউবওয়েল ও টয়লেটসহ ফসলী জমি। ফলে সেখানকার মানুষগুলো চরম বিপদের মধ্যে দিনযাপন করছে। বাঁধটি দ্রুত মেরামত না করলে যে কোন সময় নতুন করে আরও বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিতহওয়ার আশংঙ্কা করছে মাদরা, দোহার, গলাভাঙ্গা এলাকাবাসী।প্লাবিত এলাকাবাসি জানান অদ্য পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ তথা সরকারের পক্ষ থেকে কোন সহায়তা আমরা পায় নি।

স্থানীয় ভুক্তভোগী মামুন হোসেন, নিহার মন্ডল, গোলাম রাব্বানী, মিঠুন চক্রবর্ত্তীসহ অনেকেই  জানান, কপোতাক্ষ নদ খনন প্রকল্পে টিআরএম এর বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার ১৮দিন পার হলেও বাঁধ মেরামতের কার্যকর কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে কপোতাক্ষের পানি মাধবখালী খাল উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে স্থানীয় গুচ্ছগ্রামের ৪৫টি বাড়িহ গলাভাঙ্গার ১টি মসজিদ, মাদরা গ্রামের একটি মন্দিরসহ শতাধিক বাড়ি প্লাবিত হয়েছে।

তারা আরও জানান, কপোতাক্ষ নদের জোয়ারের পানির চাপে দুর্বল হয়ে যাওয়া টিআরএম’র বাঁধের অন্য অংশ যে কোনও সময় ভেঙ্গে যাওয়া আশংঙ্কা রয়েছে। ফলে আতংঙ্কর মধ্যে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে বাঁধ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। তাই দ্রুত বাঁধ সংস্কার সহ জমির মালিকদের ক্ষতিপূরনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হ স্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন এর ফেস বুক স্ট্যাটাস হতে জানা গেছে, টিআরএম সমস্যা নিরসনে শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহের জন্য বাজেট অনুমোদন পেয়েছে। ডিসি স্যার পিআইসি গঠন করবেন। আশা করি কাজটি স্বচ্ছ ও সুচারুভাবে সম্পন্ন হবে।

এ ব্যাপারে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম জানান, টিআরএম এলাকার বাঁধ সংস্কারে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহের জন্য ইতোমধ্যে বাজেট অনুমোদন হয়েছে। শীঘ্রই বাঁধের সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। জমির মালিকদের ক্ষতি পূরনের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন,আমরা দ্রুত ব্যববস্থাা নেয়ার চেষ্টা করছি। করোনার কারনে লকডাউন পরিস্থিতি না হলে এতদিন ভূক্তভোগীরা ক্ষতি পূরন পেয়ে যেতেন।এলাকাবাসির অভিযোগ আমরা মাদরাগুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা অথচ আজ প্লাবিতোর ১৮ দিন অতিবাহিত হলে ও মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদ ও সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।