নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ’র আত্রাই উপজেলায় সৌদি ফেরত এক কৃষক মরু অঞ্চলের ফসল সাম্মাম চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। নতুন জাতের বিদেশী এই সাম্মাম ফল দেখতে প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক দর্শনাথী আসছেন। অন্যদিকে অনেকেই এই ফসল চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
নওগাঁ জেলার ভর অঞ্চল বলে খ্যাত আত্রাই উপজেলার মীরাপাড়া গ্রামে সৌদি ফেরত কৃষক রেজাউল ইসলাম তাঁর দেড় বিঘা জমিতে মরুভুমি অধ্যুষিত সৌদি আরবের জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু ফল সাম্মাম চাষ করেছেন। এই ফলটি দেখতে সাদাটে অনেকটা বেল কিংবা বাতাবী লেবুর মত। ভিতরে লাল তরমুজের মত রসালো। সৌদি আরব অবস্থান করতে উক্ত রেজাউল ইসলা, সাম্মাম ফল খেয়েছেন।
দেশে ফেরার পর থেকে এই রসালো ও সুস্বাদু ফল চাষ কর্রা আগ্রহ প্রকাশ করেন। অবশেষে বগুড়াস্থ এগ্রো ওয়ান নামের এক কৃষি গবেষনা খামারে এই সাম্মাম ফলের চারা’র সন্ধান পান। ঐ ফার্মটিতে এক্সিকিউটিভ হিসেবে কার করেন রেজাউল ইসলামের ভাতিজা কৃষিবিদ মোঃ সামিউল ইসলাম। সেই সুবাদে চারার সন্ধান লাভ।
সেখান থেকে টারা এনে প্রাথমিকভাবে নিজস্ব দেড় বিঘা জমিতে সা¥¥াম চাষ করেন। এই দেড় বিঘা জমিতে চাষ দিয়ে তৈরী, চারা ক্রয়, জাংলা তৈরী, কীটনাশক, শ্রমিক ইত্যাদি বাবদ সর্বমোট খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। মাত্র তিন মাসের মধ্যে এই ফসল থেকে ফল উৎপাদন এবং বাজারজাত করা সম্ভব হয়েছে। এই তিনমাসে ঐ কৃষক সব খরচ বাদ দিয়ে কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা আয় করেছেন। চার সরবরাহকারী প্যতিষ্ঠান এগ্রো ওয়ান-এর মাধ্য বাজারজাত করাও সহজ হয়েছে। বগুড়া হয়ে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে তিনি এসব বিক্রি করছেন।
রেজাউল ইসলাম জানান এই জমি থেকে মৌসুমে প্রায় ২ হাজার ফল উৎপাদিত হয়েছে। প্রতিটি ফল ২ থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত ওজন হয়েছে। বিক্রি ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে দেখতে আসা দর্শনার্থী এবং আত্মীয়স্বজনদের নুতন ফল হিসেবে এমনি খেতে দিয়েছেন। তারপরও সব খরচ বাদ দিয়ে নীট লাভ করেছেন ৩ লক্ষ টাকা।
মাত্র ৩ মাসে দেড় বিঘা জমি থেকে ৩ লক্ষ টাকা আয় করা অন্য কোন ফসল উৎপাদন করে সম্ভব নয়। কাজেই সাম্মাম চাষ অত্যন্ত লাভজনক ফসল। বিদেশী এই নতুন ফল দেখতে, খেতে এবং কিনতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর সংখ্যক দর্শনার্থী আসছেন। তাঁরা রেজাউল ইসলামের এই লাভের গল্প শুনে নিজেরাও সাম্মাম চাষে উৎসাইহত হচ্ছেন।