ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার: ময়মনসিংহের পল্লীতে তালাকের বিষয় গোপন করে অবৈধভাবে তালাক প্রাপ্তা স্ত্রীকে নিয়ে ঘর-সংসার করার খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। জানাযায়, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার অষ্টধর ইউনিয়নের নিমতলা গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের পুত্র বাবুল মিয়া গত ২৮/০৮/২০১৮ ইং তারিখে মুক্তাগাছা উপজেলার তারাটি ইউনিয়নের তারাটি পশ্চিম পাড়া গ্রামের মোঃ আব্দুল বারেকের কন্যা সোমা খাতুনকে ইসলামী শরাহ-শরীয়ত মোতাবেক কাবিন মূলে বিয়ে করে।
বিয়ের চার মাস ভাল ভাবেই তাদের সংসার চলছিল। এর কিছুদিন পর বাবুল মিয়া তার স্ত্রী সোমা খাতুনকে তার পিতার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা যৌতুক আনতে বলে। কিন্তু সোমা তার পিতার কাছ থেকে যৌতুক আনতে রাজি হয়নি। এতে বাবুল ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময় সোমাকে শারিরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করতে থাকে। এমনকি তাকে হত্যার জন্যও দা দিয়ে কুপ দিয়ে গুরুতর আহত করেছিল। পরে স্থানিয়ভাবে তার চিকিৎসা করায় বলে সোমা জানায়। এভাবে দীর্ঘ দিন মানসিক ও শারিরিক অত্যাচারের মধ্যেও সোমা তার স্বামীর সংসারে টিকে থাকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। কিন্তু পাষান স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছিল।
এদিকে ভন্ড ও প্রতারক স্বামী বাবুল হোসেন অতি গোপনে ময়মনসিং বিজ্ঞ নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে গত ২০/১০/২০১৯ ইং তারিখ সোমাকে তালাক দেয় যার এফিডেভিট নং-৩৩৭৮, তাং-২০/১০/২০১৯ ইং। বাবুল তালাকের বিষয়টি গোপন রাখে। তালাক দেওয়ার পরেও অবৈধভাবেই তালাক প্রাপ্তা স্ত্রীকে নিয়ে ঘর-সংসার করতে থাকে। এদিকে সোমাও সরল বিশ্বাসে স্বামীর সংসার করতে থাকে। কিন্তু স্বামী বাবুল হোসেনের প্রতিনিয়ত নির্যাতনে সোমা অতিষ্ঠ হয়ে তার পিতা-মাতার কাছে বিষয়টি জানালে তার পিতা গত ২৬/০৪/২০২০ ইং তারিখে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় অভিযোগ করেন।
থানা পুলিশ ঐ দিনই নিমতলা গ্রামে গিয়ে বাবুল হোসেনের বাড়ি থেকে সোমাকে উদ্ধার করেন। এদিকে স্বামী বাবুল হোসেনের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ২য় আমলী ভার্চ্যুয়াল আদালতে ২০১৮ সনের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় একটি মামলা করে সোমা। মামলার বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর বাবুল তার কু-কৃত্বির কথা নিজেই প্রকাশ করে। সে জানায় সোমাকে পূর্বেই তালাক দিয়েছে।
এফিডেভিটে তালাকের তারিখ ২০/১০/২০১৯ ইং এবং সোমাকে তার স্বামীর বাড়ি হইতে পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ কর্তৃক উদ্ধার ২৬/০৪/২০২০ ইং তারিখ। তাহলে প্রায় ৫ মাস কিভাবে ঘর-সংসার করলেন তা সাধারণের বোধগম্য নহে। তাহলে বাবুল হোসেন অবৈধভাবে ধর্মীয় আইন বিরোধী ও রাষ্ট্রীয় প্রচলিত আইন বিরোধী কার্যকলাপ করেছেন। এ ব্যাপারে বাবুল হোসেনের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে সে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে জানায় বিষয়টি মিমাংসা হয়ে গেছে।
প্রকৃত পক্ষে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন শালিশ দরবার হয়নি বলে সোমার বাবা আব্দুল বারেক ও সোমা জানায়। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীসহ সুধী মহল উক্ত বাবুলে বিরুদ্ধে ধর্ষন মামলাসহ প্রচলিত আইনে বিচারের দাবী জানিয়েছে। এ ব্যাপারে মানবাধিকার সংস্থাসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে। যাতে হত দরিদ্র সোমা ও তার পরিবারের লোকজন ন্যায় বিচার পেতে পারে।