জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে আবারও বন্যার পানিতে বানভাসি মানুষ

ব্রহ্মপুত্র , জিঞ্জিরাম নদ-নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় বন্যায় দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। গত ৫ দিন ধরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও বারি বৃষ্টিপাতে জিঞ্জিরাম ও ব্রহ্মপুত্র নদী ও নদের পানি বৃদ্ধিপাওয়া ডাংধরা,  চর আমখাওয়া, হাতীভাঙ্গা, বাহাদুরাবাদ, চিকাজানি,  চুকাইবাড়ী দেওয়ানগঞ্জ ও পৌরশহর সহ উপজেলার  বিস্তীর্ন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।  দিশেহারা হয়ে পরেছে নিচু এলাকার মানুষ।
প্রথম দফায় বন্যায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতির কারণে কাঁচা বাজারে সবজির দাম ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। কাঁচা মরিচের দাম লাগামের বাইরে থাকায় প্রতিকেজি ২০০ টাকা, পোটল ৫০টাকা, আলু ৩৫ টাকা, পিয়াজের দাম দেশী ৫০/৬০ টাকা,বিদেশী পেয়াজ ৩০/৩৫ টাকা  দরে বিক্রি হচ্ছে। বন্যার কারণে গোখাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
ডাংধরা ইউনিয়নের সরকার পাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন এবারের বন্যা যেন মরার উপর খরার গাঁ। করোনাভাইরাসের
কারনে রুজি রোজগার নাই,আবার দফায় দফায় বন্যার কারনে ফসলি জমি সব ডুবিয়ে গেছে, প্রতিবন্ধী এক ছেলে,চার মেয়ে,অন্ধ বাবা ও মা সহ নয় জনের সংসারে একটা দিন যেন একটা বছর মনে হচ্ছে, সরকারি অনেক কিছু আসলেও আমারে কোন নেতার মনেই পড়ে না।
চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের বালুগ্রাম থেকে পানিবন্দি আব্দুল করিম পরিবার সন্তান নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাবা পানির যন্ত্রনায় আর বাঁচার উপায় নাই। প্রথম বন্যায় বাড়ি-ঘর তলিয়ে গেছে পাক করে খাবার গোছা নাই। আজকে সকাল থেকে না খেয়ে আছি। আশ্রয় কেন্দ্রে যেয়ে পাক করে খামু’।
চরআমখাওয়া ইউনিয়নের সানন্দ বাড়ী পশ্চিম পাড়া বাবলা তলী রাস্তায় থাকা পানিবন্দি অসুস্থ মোঃ আব্দুল বলেন, আমরা এমনিতেই নদী ভাঙ্গনের ফলে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি বর্তমান বন্যায় ঘরে কোমর পানি এখন থাকার যায়গা নাই, চুলাও জলে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাহাদুরাবাদ ঘাট পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি ১৯.৬৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ব্রহ্মপুত্র পানি পরিমাপক গোলাম মোস্তফা জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১৫.৫৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাইদ জানিয়েছেন, ভারতে প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে দ্রুত ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরাম নদ নদীর  পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো জানান পানি বৃদ্ধি আরও ৪-৫ দিন অব্যাহত থাকবে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদনদীর পানি বৃদ্ধি থাকায় উপজেলার ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।