ভারত কর্তৃক কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়া এবং সেটিকে সামরিকভাবে অবরুদ্ধ করার পর পাকিস্তানকেই এ ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার হতে দেখা গেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অভিযোগ করে আসছেন, ভারত কাশ্মীরে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে।
কিন্তু কাশ্মীরে এখন যা চলছে, সেজন্য দোষ পাকিস্তানেরও আছে। ইমরান খান যখন এ বিষয়ে সরলভাবে কাজ করছেন, দেশটির শক্তিশালী সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা কিন্তু তেমন অবস্থানে নেই। কাশ্মীর নিয়ে তারা অতিচালাকি করে এবং বরাবরই পরাস্ত হয়।
বিদেশ নীতিতে পাকিস্তান সবচেয়ে বড় সফলতা পায় সোভিয়েত–আফগান যুদ্ধে (১৯৯৭–১৯৮৯)। সেসময় তারা পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়তে সক্ষম হয় যুক্তরাষ্ট্র ও মুজাহিদিনদের সঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ুযুদ্ধ কৌশলে পাকিস্তান নিজেকে অপরিহার্য প্রমাণ করতে সমর্থ হয়। শুধু তাই নয়, সোভিয়েত–আফগানিস্তান ও সোভিয়েত–ভারত মিত্রের পরিবেষ্টন থেকে দূরে থাকতে নিজস্ব কৌশলগত লক্ষ্যও অর্জন করে দেশটি।
সেই যুদ্ধে ব্যাপকভাবে জয়লাভের পর পাকিস্তানের সামনে সুযোগ আসে সামরিক ও গোয়েন্দা সক্ষমতা বৃদ্ধি, জঙ্গিগোষ্ঠী এবং সেসকল নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার, যাদেরকে চিরশত্রু ভারতের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো যেতে পারে।
পাকিস্তান কখনো ভারতের সঙ্গে সরাসরি সামরিক যুদ্ধে যায়নি। প্রত্যেকেই আশঙ্কা করে এই দুই পারমাণবিক ক্ষমতাধরের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ হলে ফল হবে ভয়াবহ। পাকিস্তান চিন্তা করলো, আফগানিস্তানে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে সফল হওয়া কৌশলগুলো এখন ভারতকে চাপে রাখতে কাজ লাগবে। কিন্তু তারা বোঝেনি যে, ভারত সোভিয়েত ইউনিয়ন নয়। ভাষাগত ও সাংস্কৃতিকভাবে ভারত কাশ্মীরে বিদেশি নয়। যেমনটা সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তানে ছিল।