বন্ধ স্টেশনে থামছে ট্রেন টিকিট ছাড়াই ওঠানামা যাত্রীর

জনবল সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ময়মনসিংহের দুটি রেল স্টেশন। যদিও ওই দুটি
স্টেশনে নিয়মিত ট্রেন থামছে। যাত্রী ও মালপত্র ওঠানামাও স্বাভাবিক রয়েছে। এ দুটি স্টেশন
থেকে টিকিট ছাড়াই যাত্রী ওঠানামা করছেন। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে রেল
কর্তৃপক্ষ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক যাত্রী বলেন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে টিকিট
না থাকার সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
তাছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা তো আছেই। এ দুটি রেল স্টেশনে দ্রæত
জনবল নিয়োগ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম পরিচালনার দাবি স্থানীয়দের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জনবল সংকটের কারণে ২০০৯ সাল থেকে ঢাকা-
ময়মনসিংহ-গৌরীপুর রেলপথের তারাকান্দা উপজেলার বিসকা রেল স্টেশনটি বন্ধ রয়েছে।
একইভাবে ২০০৪ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে ভৈরব-চট্টগ্রাম রেলপথের গৌরীপুর উপজেলার
বোকাইনগর রেল স্টেশনও।
আরেক যাত্রী জানান দীর্ঘদিন ধরে স্টেশন দুটির কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রতিনিয়ত চুরি
হচ্ছে রেলওয়ের মূল্যবান সম্পদ। অযতেœ নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকা মূল্যের জিনিসপত্র।
সম্প্রতি দুটি স্টেশন সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ভবন ও সরঞ্জাম আছে পর্যাপ্ত।
রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় রেলওয়ের ওই ভবনগুলোয় প্রতিদিন বসে মাদকসেবী ও জুয়াড়িদের
আড্ডা। দুটি স্টেশনেই নিয়মিত ট্রেন থামে। যাত্রীও ওঠানামা করে। কিন্তু টিকিট বিক্রি
না হওয়ায় বাধ্য হয়েই টিকিট ছাড়া যাতায়াত করেন যাত্রীরা। এ সুযোগ কাজে
লাগিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে রেলওয়ের আনসার ও একটি চক্র।
এদিকে তারাকান্দা উপজেলার বিসকা রেলওয়ে স্টেশনের কক্ষগুলোয় এখন তালা ঝুলছে। রেলের
স্টাফদের আবাসিক ভবনগুলো অযতœ-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। এখনো এ স্টেশনে জারিয়া,
মোহনগঞ্জ, ভৈরবগামী ১৬টি ট্রেন থামে। প্রতিদিন শত শত যাত্রী বিসকা স্টেশন থেকে
ময়মনসিংহ, গৌরীপুর, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, শ্যামগঞ্জ, পূর্বধলা, জারিয়া, নেত্রকোনা,
মোহনগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এ স্টেশন
থেকে বিক্রি হয় না কোনো ট্রেনের টিকিট। যাত্রীরা বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ করায়
প্রতি বছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হরাচ্ছে। আবার ট্রেনে উঠে ভ্রাম্যমাণ আদালতে
জরিমানা বা টিকিট চেকারদের কাছে হয়রানির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। দিতে হচ্ছে
দ্বিগুণের বেশি ভাড়া। জনবল সংকটের কারণে এ স্টেশনে রেলক্রসিং হয় না। ক্রসিংয়ের জন্য
প্রতিটি ট্রেন প্রায় ১ ঘণ্টা গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন বা শম্ভুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে
আটকে থাকছে। এ বিষয়ে গৌরীপুর রেল স্টেশান ইনচার্জ আব্দুর রাশিদ জানিয়েছেন
দুটো স্টেশনে লোকবল সংকটের জন্য কার্যক্রম চালানো সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি
উর্ধতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট
জহুরুল ইসলাম জানান, লোকবল সংকটের কারণে বিসকা ও বোকাইনগন স্টেশন দীর্ঘদিন
বন্ধ রয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ লোকবল দিলে এই স্টেশন পুনরায় চালু হবে।