আমিনুল ইসলামঃ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আবাসিক এলাকায় সাপ্তাহিক বাজার থেকে মাসে ৮ লাখেরও বেশি টাকা চাঁদাবজি করছে একটি সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট। বছিলা ব্রীজের উত্তর পাশ থেকে শুরু করে সিটি ডেভেলপার্স আবাসিক এলাকার শেষ মাথা পর্যন্ত বিস্তৃত এ বাজারটি বসে প্রতি বৃহস্পতিবার। সাধারন লোকজনের কাছে বাজারটি মেলা নামে পরিচিত। কয়েকবছর আগে এখানে একটি মেলা বসেছিলো সেই থেকে এটি আজ চলমান।
গৃহস্থলির পণ্য থেকে শুরু করে রেষ্টুরেন্ট পর্যন্ত সবই বসে এখানে। বাজারটির কারনে আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের শান্তি বিনষ্ট হলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না। কারন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেড নিয়ন্ত্রন করছে বাজারটি। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লতিফুর রহমান বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। সাড়ে চারশ থেকে ৫শ’ ভ্রাম্যমান দোকানের কারনে আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের গৃহ ণির্মান সামগ্রী আনা-নেয়াসহ দৈনন্দিন কাজকর্ম বন্ধ রাখতে হয় । বিশেষ করে রাস্তার পাশে মসজিদ ও স্কুলের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ও পাঠদানে সমস্যা হয় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
তারা আমাদের কন্ঠকে জানান, বছিলা সিটি ডেভেলপার্স আবাসিক এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত বাজার বসার কারণে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হতে হয়। শফিকুল ইসলাম নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বাজারে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাক চিৎকারে বাড়িতে অসুস্থ বৃদ্ধা মায়ের অনেক সমস্যা হয়। আরেক বাড়িওয়ালা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন,আবাসিক এলাকায় বাজারের কারণে এখানে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যঘাত ঘটছে। বছিলা সিটি ডেভেলপার্স লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজী শাহজাহান মিয়ার কাছে বাজার বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবাসিক এলাকায় বাজারের কোন প্রয়োজন নেই। কে বা কারা চালায় আমি জানিনা। করোনাকালীন বাজার চলার সময় আমি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ড কমিশনার আসিফকে অনুরোধ করেছিলাম বাজারটি বন্ধ করার জন্য।
তারপরও কেন চলছে আমার জানা নেই। হাজী শাহজাহান মিয়া বলেন, চাঁদাবাজি হয় এটা সত্য এবং চাঁদার একটি অংশ থেকে ১৫ হাজার টাকা মসজিদের উন্নয়ণ তহবিলে দেয়, এবিষয়টি আমি জানি। বাজারে দোকানদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেঁচাকেনা ভাল হলেও ৫শ’ টাকা চাঁদা দিতে হয়। স্থানীয় প্রভাবশালীরা দীর্ঘদিন যাবত এ বাজারটি চালিয়ে আসছে। প্রতি দোকান থেকে ক্ষেত্র ভেদে চারশত থেকে পাঁচশ’ টাকা চাঁদা আদায় করে সিয়াম নামের এক যুবক । এতে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২লাখ টাকা চাঁদাবাজি হয়। যা মাস শেষে ৮ লাখ টাকায় দাড়ায়। এ বিষয়ে মোহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি’র) কাছে জানতে চাইলে বলেন, বাজার বসার বিষয়টি আমার জানা নেই, আমি অবশ্যই ব্যাবস্থা নিব।