বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, এক অসহায় মুক্তিযোদ্ধার সশ্রদ্ধ সালাম গ্রহণ করবেন। আমি মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আঃ মালেক বিশ্বাস, পিতা- মৃত আবদুস সামাদ বিশ্বাস, মাতা- মৃত সাজু বিবি, গ্রাম- খলিশাখালি, ডাকঘর-মন্ডলগাতি, উপজেলা- মহম্মদপুর, জেলা- মাগুরা একজন অসহায় মুক্তিযোদ্ধা। আমি ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রারম্ভিক সময়ে বাঙ্গালি জাতির মহান নেতা জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির উদীপ্ত আহবানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে বেড়িয়ে পড়ি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক যথাক্রমে জনাব হাবিবুর রহমান বাঁশি মিয়া, নজির মিয়া, আইয়ুব হোসেন ও বীর প্রতীক গোলাম ইয়াকুব মিয়ার সান্নিধ্যে হালকা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তাদের নির্দেশেই নহাটা এবং গংগারামপুরে সক্রিয় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি।
এরপর ১৯৭১সালের আগস্ট মাসে ভারী অস্ত্র চালনায় আরোও দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনে বীর প্রতীক গোলাম ইয়াকুব মিয়ার নির্দেশে প্রশিক্ষণ নিতে ভারতের রানাঘাট ক্যাম্পে অবস্থান করি। মুক্তি সংগ্রামী জনাব ছাদেক মিয়ার নেতৃত্বে ১ (এক) মাস ট্রেনিং গ্রহণ করি। পূণরায় আমাকে সেপ্টেম্বর মাসে ভারী অস্ত্রের উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের নদীয়ায় চাপড়া ইয়ুথ ক্যাম্পে নেওয়া হয় । উল্লেখ্য চাপড়া ইয়ুথ ক্যাম্পটি আসাদ মিয়ার ক্যাম্প নামে পরিচিত ছিল। যার কমান্ডার ছিলেন এস কে ব্যানার্জী।
এস.কে ব্যানার্জীর নেতৃত্বে চাপরা ইয়ুথ ক্যাম্পে থ্রি নট থ্রি রাইফেল, এসএমজি, এলএমজি চালনার দক্ষতা অর্জনের প্রশিক্ষণ গ্রহন করি। চাপরা ইয়ুথ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় অর্জন হলে সেখান থেকে আমাদেরকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। চাপরা ইয়ুথ ক্যাম্পে আমার সহযোদ্ধা ছিলেন মোঃ রফিকুল ইসলাম, কমান্ডার, নহাটা ইউনিয়নন (দরিসালধা, জীবিত), লাল মুক্তিবার্তা নং- ০৪০৮০৩০১৬৬, মোঃ আতিয়ার জেয়ার্দ্দার (বিলপাড়া, জীবিত), লাল মুক্তিবার্তা নং- ০৪০৮০৩০০৮০, শেখ আতিয়ার রহমান (দীননাথ পাড়া, জীবিত), লাল মুক্তি বার্তা নং- ০৪০৮০৩০০৭০, মোঃ রবিউল ইসলাম, খলিশাখালী, মোঃ আজাদ মোল্লা (খলিশাখালী) সহ আরো অনেকে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে আপনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার পরিচালিত হচ্ছে, আপনি মানবতার জননী। আপনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক, স্বাধীনতার ঘোষণাকারী, সোনার বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য কন্যা। আপনাকে আরো জানাই যে, চাপড়া ইয়ুথ ক্যাম্পে আমার সহযোদ্ধাগণ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সহ সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আমি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও কোন রকম সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না।
হে মানবতাবাদী প্রধানমন্ত্রী, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আমার রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক কর্ণেল আতাউল গণি ওসমানীর (এম.এ.জি ওসামনী) দেয়া স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদপত্র। রয়েছে আপনার সাক্ষরিত সনদ যা ২২ জুলাই ১৯৯৯ইং তারিখে ইস্যুকৃত, ক্রমিক নং- ১১৪১৬, রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং- ১৬৭, তাং- ১১/০৫/২০০৩ ইং এর সাময়িক সনদপত্র। আরো রয়েছে ইউনিয়ন কমান্ডার, উপজেলা কমান্ডার ও জেলা কমান্ডার এর প্রত্যয়ন পত্র। সনদের কাগজাদি ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে কোন ভাতা কিংবা অন্য কোন সুযোগ-সুবিধা আমার ভাগ্যে জোটেনি।
১৯৭২ সালে আমি লাল বাহিনীতে যোগদানের জন্য ঢাকায় ৫ দিন অবস্থান করার পর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি যোগদানের জন্য নিজ জেলা মাগুরাতে ফিরে যাই,কিন্তু দুই দুইবার মাগুরাতে যোগদান করতে গেলেও পরবর্তী তারিখে যেতে বলা হয়। কিন্তু আমি শারীরিক অসুস্থতার কারণে নির্দেশকৃত তারিখে যেতে পারি নাই। সেই থেকেই অদ্যাবধি আমি মুক্তিযোদ্ধার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি উপজেলার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি বরাবর উপরোক্ত সকল সনদ ও প্রত্যয়নপত্র এবং সহযোদ্ধাদের প্রত্যয়নসহ আবেদন করি। যার নং-ডিজি নং- ১০৬৬৯১. মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি জীবন সায়াহ্নে, ২ (দুই) ছেলে ও ৬ (ছয়) মেয়ে নিয়ে নিদারুন কষ্টে আছি। কোন বেলা খেয়ে-না খেয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে জীবনযাপন করছি। বার্ধক্যজনিত কারণে আমার শারীরিক অবস্থাও ভালো যাচ্ছেনা। চিকিৎসা ও ঔষধ কেনার সামর্থ্যটুকুন নেই।
অতএব, দেশ দরদী, মুক্তিযোদ্ধা দরদী, জনদরদী, মানবতার মা, জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে এই অসহায় মুক্তিযোদ্ধা আঃ মালেক বিশ্বাসের বিনীত আরজ একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সনদ প্রদান পূর্বক মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রদানসহ অন্যান্য সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে জীবনের বাকি ক,টি দিন অতিবাহিত করার সুযোগ দানে বাধিত করবেন।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক বিশ্বাস, মোবাইল নং-অনুঃ- ০১৭৫৬২৩৩১৪৯