গোলাম রাব্বানী নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডিমলায় সাইফুল ইসলাম (লেলিন) নামে এক আ’লীগ নেতা স্নাতক(পাস) কোর্সের ভুয়া সনদে শিক্ষকতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার দক্ষিণ কাকড়া সাইফুন সাইড নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারি শিক্ষক। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসহ এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সাইফুল ইসলাম (লেলিন) নাউতারা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ২০১৬ সালে ২৩ এপ্রিল নৌকা প্রতীক নিয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি উপজেলার ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ কাকড়া সাইফুন সাইড নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগযান করে ২০০০ সালের ১ মার্চ এমপিও ভুক্ত হন। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে তিনি বিদ্যালয়ে না গিয়েও সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। ওই সময় থেকে বিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়ার জন্য মোফাজ্জল হোসেন মোফা নামে এক ব্যক্তিকে প্রক্সি শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব দেন।
এমতাবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শক ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোঃ আলমগীর হাসান ২০১৯ সালের ২৮ জুন “দক্ষিণ কাকড়া সাইফুন সাইড নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়”-এর পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করেন। চলতি বছরের ২৮ অক্টোবরে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সহকারি শিক্ষক (সমাজ বিজ্ঞান) সাইফুল ইসলামের স্নাতক(পাশ) সনদের ছায়ালিপি জাতীয় বিশ্বিবিদ্যালয়ে প্রেরণ করা হলে মন্তব্য করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ড অনুয়ায়ী ছায়ালিপির তথ্য সঠিক নয়। অধিকতর যাচাইরের জন্য মূল সাময়িক সনদ, মূল রেজিঃ ও মূল প্রবেশপত্র চাওয়া হলে ৬ (ছয়) মাস পরেও সাইফুল ইসলাম সে সব কাগজপত্র দাখিল করতে পারেনি।
ফলে “বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ড অনুয়ায়ী স্নাতক(পাস) এর ছায়ালিপির তথ্য সঠিক নয়” প্রনিধানযোগ্য এবং নিয়োগকালে বিধি মোতাবেক সঠিক সনদ ছিল না। এমতাবস্থায় তৎকর্তৃক এমপিও ভুক্তির তারিখ হতে মে/২০১৯ পর্যন্ত গৃহীত সরকারি বেতন-ভাতা বাবাদ মোট ১৬ লাখ ২০ হাজার ২৪৮ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ। পরবর্তীতে বেতন-ভাতা গ্রহন করে থাকলেও তাও ফেরতযোগ্য হবে। এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম(লেলিন) এর সাথে মোবাইল ফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। তবে কার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করছেন এটাও খেয়াল করবেন।
সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া বলেন, সাইফুল ইসলাম (লেলিন) নিয়োগের সময় আইএসসি পাশের সনদ নিয়ে জুনিয়র শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ নেন। তবে পরবর্তীতে তিনি স্নাতক(পাস) এর সনদ দিয়ে সহকারি শিক্ষক (সমাজ বিজ্ঞান) পদে পদোন্নতি লাভ করেন। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অডিটে ওনার ডিগ্রী পাশের সনদের বিষয়ে একটি আপত্তি দিয়েছিল পরবর্তীতে সে আপত্তি নিস্পত্তি হয়ে গেছে। রাজনৈতিক দ্বন্দের কারণে একটি মহল এসব কথা ছড়াচ্ছে। তবে তিনি প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেয়ার কথাটি স্বীকার করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোন কাগজপত্র আসেনি। মন্ত্রণালয় যেহেতু বিষয়টি দেখছেন সেখানে আমার কিছু বলার নেই।