ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার: ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন সরকারী
অফিস ও পৌরসভাগুলোতে বিভিন্ন পত্রিকার বিজ্ঞাপনের বিলের লাখ লাখ টাকা
বকেয়া থাকলেও কর্তৃপক্ষের অনিহার কারণে বিল পাচ্ছে না পত্রিকা অফিসগুলো।
এতে বিজ্ঞপ্তি সংগ্রহকারী সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট পত্রিকা অফিসগুলো আর্থিক
সংকটে সময় পার করছে।
পত্রিকা অফিসগুলো তাদের কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। মফস্বল এলাকায় কর্মরত বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকগণ তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন সংগ্রহ তাদের আয়ের একটি উৎস। মাঠ পর্যায়ে তারা বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী ও পৌরসভা থেকে বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করে থাকে। বিজ্ঞাপন বিলের টাকা হতে তারা যৎ সামান্য কমিশন পেয়ে থাকে।
বাস্ততে এ দিয়েই তাদের জীবিকা নির্বাহ হয়ে থাকে। খোজ নিয়ে জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন পৌরসভা ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারী অফিস থেকে স্থানীয় ও জাতীয় বাংলা ও ইংরেজী দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সরকারী ইমারত কাজসহ বিভিন্ন টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি, ইজারা, ক্রয়-বিক্রয়, নিলামসহ বিভিন্ন সরকারী কাজের বিজ্ঞপ্তি পত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশ করে ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করা হয়।
যথারীতি সিডিউল বিক্রির টাকা সরকারী কোষাগারে জমা হলেও পরবর্তীতে পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি বিলের টাকা পরিশোধে কর্তৃপক্ষের অনিহা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এতে পত্রিকা অফিসগুলো দীর্ঘদিন পরে থাকায় বিল না পেয়ে তাদের কার্যক্রম চালাতে আর্থিকভাবে হিমশিম খাচ্ছে। অন্যদিকে মফস্বলে কর্মরত সাংবাদিকরাও আর্থিক টানাপোড়নের মধ্যে
কালাতিপাত করছে।
খোজ নিয়ে জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কার্যালয় গুলোতে লাখ লাখ টাকার পত্রিকার বিল বকেয়া থাকলেও সেসব বিল পরিশোধ করা হচ্ছে না। পৌরসভাগুলোর একই অবস্থা লক্ষনীয়। এ ব্যাপারে মুক্তাগাছা পৌরসভার সচিব মোঃ ইউনুস আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, টেন্ডার বিজ্ঞপ্তির সিডিউল বিক্রির টাকা সরকারী কোষাগারে জমা করা হয়।
পরবর্তীতে সিডিউল বিক্রির অর্থ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পৌরসভা/সংস্থায় বরাদ্ধ না দেয়ায় পত্রিকা টেন্ডার কমিটির সম্মানী ভাতা প্রদান ও পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি বিল পরিশোধ করতে পারছেন না। তিনি আরো জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল শাখাসহ সরকারী অফিসগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ তাদের সরকারী বেতন ট্রেজারীর মাধ্যমে উত্তোলণ করে থাকেন কিন্তু পৌরসভাগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পৌরসভার আয় থেকে পরিশোধ করা হয়।
বর্তমানে পৌরসভার যে আয় হয়ে থাকে তা থেকে কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করতেই
হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাদের নিয়মিত বেতন পরিশোধ করা যাচ্ছে না। অন্যান্য খাতের বকেয়া আয় থেকে পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরো জানান, তৃতীয় নগর উন্নতীকরণ সেক্টর প্রকল্পের (ইজিপি) আওতায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিগুলোর দরপত্র আহবান, দরপত্র খোলা, ঠিকাদার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যাবতীয় কাজ লটারীতে হচ্ছে।
যার জন্য এখন আর কেউ সিডিউল কিনতে আসে না। যাবতীয় কাজ অনলাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে এতে আয়ও কমে গেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, তারা একাধিকবার পত্রিকার বিল পরিশোধের টাকার চাহিদা চেয়ে সদর দপ্তরে পত্র দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তারা টাকা পাননাই। টাকা আসলেই পত্রিকার বিল পরিশোধ করা হবে।