বাগেরহাট অফিসঃ একাত্তরে বাগেরহাটের শরণখোলার মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সংগঠক ও প্রথম শহীদ ক্যাডেট অফিসার আনোয়ার হোসেনের অরক্ষিত সমাধি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারের শহীদদের মাজার চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে স্থানান্তর করা সমাধিটি পাকাকরণের কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪জানুয়ারি) সকালে ইউএনও সরদার মোস্তফা শাহিন এই বাধাই কাজের উদ্বোধন করেন। ক্যাডেট অফিসার শহীদ আনোয়ার হোসেনকে উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের সুন্দরবন সংলগ্ন বগী গ্রামের নিজ বাড়িতে সমাধিস্থ করা হয়।
পরবর্তীতে বলেশ্বর নদের অব্যাহত ভাঙনে কবরটি বিলিন হতে থাকে।এ অবস্থায় পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম মামুন উজ জামান কবরটি স্থানান্তরের উদ্যোগ নেন। ওই সময় তিনি কবর থেকে শহীদ আনোয়ারের দেহাবশেষ তুলে কফিনে মুড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গার্ড অব অনার প্রদান শেষে যথাযোগ্য রাস্ট্রীয় মর্যাদায় রায়েন্দা বাজারস্থ মুক্তিযোদ্ধা করস্থানে দ্বিতীয়বার সমাহিত করেন। ওই সময় কবরটি বাধাই না করায় অরক্ষিত হয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের কবরের মাঝে শহীদ আনোয়ারের কবরটিও ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকে। সম্মুখযুদ্ধে প্রথম বীর শহীদের কবরের এমন দুরাবস্থা দেখে সাংবাদিক নজরুল ইসলাম আকনসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে সমাধিটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন।শরণখোলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ও যুদ্ধকালীন কমান্ডার হেমায়েত উদ্দিন বাদশা জানান, সেনাবাহিনীর ক্যাডেট অফিসার আনোয়ার হোসেন যুদ্ধকালীন কমান্ডার ছিলেন।সম্ভবত ৭১সালের জুন মাসের ঘটনা। তার সঙ্গে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
ওইদিন তারা শরণখোলা থানা ভবনের রাজাকার ক্যাম্পে আক্রমণ করেন। তখন রাজাকারদের পাল্টা গুলিতে ক্যাডেট আনোয়ার হোসেন শহীদ হন। তিনিই শরণখোলার প্রথম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। তার কবরটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ায় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমেই বিষয়টি আমি জানতে পেরে সমাধিটি সংরক্ষণের প্রতিশ্রæতি দেই। সমাধিটি বাধাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। একজন বীর শহীদের স্মৃতি রক্ষা করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।