মুক্তিযোদ্ধা তালিকার সংশোধন ১৫ মার্চের মধ্য

রিপোর্ট রুপান্তর বাংলা– ২৬ মার্চ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে সরকার। এজন্য অনলাইনে তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্যগত ভুল-ত্রুটি সংশোধনের জন্য ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বুধবার (৩ মার্চ) বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভুল-ত্রুটি সংশোধনের অনুরোধ জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সকল জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ রুপান্তর বাংলাকে বলেন, ‘আমরা আগামী ২৬ মার্চ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছি। এমআইএসে (মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সম্বলিত ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) অন্তর্ভুক্ত তালিকায় নাম, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্যসহ অন্য কোনো ভুল-ক্রুটি আছে কিনা তা দেখার জন্য ডিসি ও ইউএনওকে বলা হয়েছে। তারা আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত এটা করবেন।’
এদিকে অনলাইনে এক লাখ ৪০ হাজারের মতো বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৩৯ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সনদ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যাচাই শেষে এর একটা অংশও যুক্ত হবে। তাই ২৬ মার্চ যে তালিকা প্রকাশ হবে সেখানে এক লাখ ৭০ হাজারের মতো মুক্তিযোদ্ধা স্থান পেতে পারেন বলেও জানান সচিব।
তিনি বলেন, ‘যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। যাচাই সম্পন্ন হলে যাদের সনদ সঠিক প্রমাণিত হবেন তারা তালিকায় যুক্ত হবেন।’
ডিসি ও ইউএনওদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘জেলা (মহানগরের ক্ষেত্রে) ও উপজেলা প্রশাসন এবং সমাজসেবা অধিদফতরের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এবং ইতোপূর্বে দেয়া ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সম্বলিত ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমআইএস) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় স্বীকৃত ৩৩ ধরনের প্রমাণকের মধ্যে যেকোনো একটিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম থাকলে তার বা তাদের তথ্যাদি সন্নিবেশ করা হয়েছে, যার কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে।’
‘উল্লিখিত এমআইএস-টি ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের (www.molwa.gov.bd) মেনুবার এমআইএস হিসেবে প্রদর্শন করা হয়েছে, যা সকলের জন্য উন্মুক্ত। জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ওই এমআইএস-এ জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম, ঠিকানা এবং জন্ম তারিখ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযোজিত হয়েছে। একইভাবে, মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরবর্তী সুবিধাভোগীদের তথ্যাদিও সন্নিবেশিত হয়েছে। এছাড়া এমআইএসে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রোফাইলে একটি ইউনিক নম্বরসহ ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার যত ধরনের প্রমাণক যথা- ভারতীয় তালিকা, লাল মুক্তিবার্তা বা বিভিন্ন শ্রেণির গেজেটে নাম রয়েছে তার নামসহ নম্বরও উল্লেখ রয়েছে। ফলে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম, পরিচিতি বা মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত প্রমাণকে তথ্যগত বিভ্রাট থাকলে তা সংশোধন করা প্রয়োজন।’
এতে আরও বলা হয়, ‘এমআইএসে প্রকাশিত কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে কেউ চলমান যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের আওতায় থাকলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন অনুযায়ী ভিন্নরূপ কোনো সুপারিশ করা হলে পরবর্তী সময়ে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া, ২০০৯ সাল বা এর আগে প্রকাশিত বেসামরিক গেজেটগুলো নিয়মিতকরণের লক্ষ্যে যাচাই-বাছাই পরবর্তী প্রতিবেদনে যে সকল ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা মহানগরের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন অন্যান্য প্রমাণকে নাম থাকায় যাদেরকে যাচাই-বাছাইয়ের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এ সংক্রান্ত প্রমাণকের তথ্যগুলো নিজ দায়িত্বে এমআইএসে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।’
চিঠিতে বলা হয়, ‘এমআইএসের ভিত্তিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত তালিকা চূড়ান্ত করা এবং সঠিক ব্যাংক হিসাবে সম্মানী ভাতা পাঠাতে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম ও পিতার নাম ছাড়া অন্য কোনো তথ্য (ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত তথ্যসহ) সংশোধনের প্রয়োজন থাকলে তা আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধন করার জন্য অনুরোধ করা হয়।’
একইসঙ্গে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার এনআইডিতে বর্ণিত নাম ও পিতার নামের সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণকে উল্লিখিত নাম ও পিতার নামে অস্বাভাবিক বিচ্যুতি দেখা গেলে প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়া যেতে পারে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।
MOLWA.GOV.BD
molwa.gov.bd