হাজার শয্যার করোনা হাসপাতাল হচ্ছে মহাখালীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় দেশের সবচেয়ে বড় কোভিড হাসপাতাল চালু হচ্ছে। এক হাজার শয্যার এই হাসপাতালে ১০০টি আইসিইউ শয্যা এবং ১১২টি এইচডিইউ (উচ্চ-নির্ভরতা ইউনিট) রয়েছে। এতদিন করোনা আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মহাখালী মার্কেটটি এখন দেশে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় সবচেয়ে বড় হাসপাতাল হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন।

এসময় তিনি বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে ঢাকার সব হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা করছি। নতুন করে ডিএনসিসি মার্কেটে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল স্থাপন করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে আড়াই হাজার শয্যাকে পাঁচ হাজার করা হয়েছে, এর চেয়ে বেশি বাড়ানো সম্ভব না। আর যদি প্রতিদিন ৫/৬ হাজার করে রোগী বাড়তে থাকে, তাহলে সারা শহরকে হাসপাতাল বানালেও সামাল দেওয়া সম্ভব নয়, বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

ডিএনসিসি হাসপাতাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে হাসপাতালটির ২৫০ শয্যা এবং কিছু আইসিইউ শয্যা চালু করা যাবে। মাসের শেষ দিকে প্রায় পূর্ণাঙ্গভাবে হাসপাতালটি যাত্রা শুরু করবে। এখানে শুধু করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। এ হাসপাতালে কোনো অপারেশন করা হবে না। কারও অপারেশন দরকার হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করানো হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটি পরিচালনা করবে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। আর হাসপাতাল পরিচালনায় ৫০০ চিকিৎসক, ৭০০ নার্স ও ৭০০ স্টাফ এবং ওষুধ-সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এরইমধ্যে হাসপাতালটি বাস্তবায়নে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, এতদিন এক লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট আয়তনের ফাঁকা এ মার্কেটটি করোনা আইসোলেশন সেন্টার এবং বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার ল্যাব হিসেবে ব্যবহৃত হত। সব ঠিক থাকলে এ মাসের মাঝামাঝি ২৫০ শয্যা ও শেষ নাগাদ প্রায় এক হাজার বেড চালু করার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে হাসপাতাল প্রশাসন।

তিনি বলেন, এখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন কাজ করে যাচ্ছে। আমি আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের পক্ষেই এখানে কাজ করে যাচ্ছি। আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের নিয়ন্ত্রণে ও তত্ত্বাবধানে এখানে কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। এখানে আমাদের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক সহায়তা দিচ্ছে জনবল, আর্থিক সহায়তা, ওষুধ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে। আর্মড ফোর্সেস থেকেও চিকিৎসক, নার্সসহ আমাদের কিছু থাকছে। ডিএনসিসি তাদের জায়গা দিয়েছে, একইসঙ্গে অন্যান্য কিছু সাপোর্ট দিয়ে আমাদের সাহায্য করে যাচ্ছে। মূলত এই তিনটি প্রতিষ্ঠান মিলেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

এর আগে গত বছরের ৯ আগস্ট পরিদর্শনে গিয়ে মহাখালীর এই মার্কেটটিকে ৫০০ শয্যার আরবান (নগর) হাসপাতালে রূপান্তরের ঘোষণা দিয়েছিলেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

সে সময় তিনি বলেছিলেন, ৭ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর ডিএনসিসি মার্কেটটি মূলত পাইকারি কাঁচাবাজারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। এখন এটিকে কীভাবে আরবান হাসপাতালে রূপান্তর করা যায়, আমরা তার পরিকল্পনা করছি। এই ভবনকে আমরা যদি আরবান হাসপাতালে রূপান্তর করতে পারি, তাহলে নগরবাসীর জন্য অনেক সুবিধা হবে।