মুক্তাগাছায় ছাড়পত্র ছাড়া নতুন বিদ্যালয় স্থাপন ও সরকারি করণ, জনমনে নানা প্রশ্ন

ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার: ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা রামভদ্রপুর মৌজায় ছাড়পত্র ছাড়াই নতুন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন নীতিমালা অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয় কর্তৃক দূরত্ব সংক্রান্ত বিষয়ে ছাড়পত্র আবশ্যক হলেও পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয় কর্তৃক কোন ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি বলে সূত্রে জানায়। তবে কিসের ভিত্তিতে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হলো ও সরকারীকরণ করা হলো তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে সুধী মহল মনে করছেন।

এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সূত্রমতে, নতুন বিদ্যালয় স্থাপনে নিকটবর্তী বিদ্যালয়ে কমপক্ষে ২ কিলোমিটার দূরত্বে থাকার বিধান থাকলেও বিদ্যালয়টি পার্শ্ববর্তী লক্ষীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৩০০ মিটার দূরত্বে স্থাপন করা হয়। যা বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিবন্ধন নীতিমালার বর্হিভূত।

জানাযায়, পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয় লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৩০০ মিটার এবং ৩৮নং লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেও নতুন রামভদ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির দূরত্ব ৩০০ মিটার। তাছাড়া, বিদ্যালয় স্থাপন পরিচালনা নিবন্ধনের শর্ত ও নীতিমালা অনুযায়ী ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যার ১৫০ জন থাকার কথা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২৫/৩০ জন। তবে স্কুল রেজিষ্টারে ছাত্র-ছাত্রীর নাম যাহা লেখা রয়েছে বাস্তবে তার মিল নেই।

প্রবাদে আছে, “কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই”। স্কুলের প্রবেশপথ দুই দিকে উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে স্কুলের পূর্ব পার্শ্বে বাঁশ বাগান ও জঙ্গল। পশ্চিমে বাজারের দোকানঘর ও বাড়ি যাতায়াতের পথ নেই। দক্ষিনে ফসলি জমি ও পুকুর। উত্তরেও পুকুর রয়েছে যাতায়াতের কোন পথ নেই। মূল স্কুলের প্রবেশের কোন পথ নেই।

এ ব্যাপারে রামভদ্রপুর নতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিকা ইয়াসমীনের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি জানান,স্কুলের প্রবেশের কোন রাস্তা নাই তবে, পুকুর পাড় দিয়ে মাটি ভরাট করে রাস্তা করা হবে। স্কুলের দূরত্বের ছাড়পত্রের বিষয় জানতে চাইলে ঐ শিক্ষক জানান, তারা কোন ছাড়পত্র নেন নাই সরাসরি সরকারি করণ করা হয়েছে।

লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জিব আচার্য জানান,কোন ছাড়পত্র দেন নাই।প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক চিহ্নিত বিদ্যালয় বিহীন গ্রাম সমূহে বিদ্যায় স্থাপনের অগ্রাধিকার দিবে যদি পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয় যাতায়াত, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রাকৃতিক বাধাগ্রস্থ হয়ে থাকে।

ঘনবসতিপূর্ণ আদিবাসী শিশু সহনীয় মাত্রা প্রতিবন্ধি শিশু বা শ্রমজীবী শিশুদের জন্য পরিচালিত বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শর্ত শীথিল থাকলেও নতুন স্থাপিত সরকারি বিদ্যালয়টি উল্লেখিত শর্তে অন্তভূক্ত হয়নি বিধায় বেসরকারী স্কুল রেজিস্ট্রেশন বিধিমালা ১৯৬২ অনুযায়ী পরিবেশগত নিয়মেও বিদ্যালয়টির ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অনুপযোগী ও নীতিমালা লঙ্ঘিত হয়েছে।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।