নিউজ ডেস্ক : কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে কোনোদিনও উগ্রবাদী-জঙ্গিবাদ ইত্যাদি প্রচার-প্রসারের সুযোগ ছিল না এবং আগামীতেও থাকবে না। অসতর্কতাবশত যদি কারো কারো বক্তব্যে কিছু এমন কথা এসে যায়, তবে তা নিঃসন্দেহে কওমি মাদ্রাসার অস্তিত্বের সংকট ডেকে আনবে। তাই বয়ান বক্তৃতায় সচেতনভাবে এমন কথা পরিহার করতে হবে- যা দেশ, সমাজ এবং কওমি মাদ্রাসাগুলোতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার সম্ভাবনা হতে পারে।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) তাহাফ্ফুজে মাদারিসে কওমিয়া বাংলাদেশ (বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা সংরক্ষণ পরিষদ) আয়োজিত দিনব্যাপী এক আলোচনা ও পরামর্শ সভায় বিভিন্ন মাদ্রাসার মুহতামিম ও শিক্ষকরা এসব কথা বলেন।
রাজধানীর তেজগাঁও রেলওয়ে জামিয়া ইসলামিয়ায় অনুষ্ঠিত এ পরামর্শ সভায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত মাদরাসাগুলোর পরিচালক বা তাদের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
তাহাফ্ফুজে মাদারিসে কওমিয়া বাংলাদেশের আহ্বায়ক মাওলানা ড. মুশতাক আহমদের সভাপতিত্বে সভাটি পরিচালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী।
ড. মুশতাক আহমদ বলেন, কওমি মাদ্রাসা আবহমানকাল থেকেই একটি পূর্ণাঙ্গ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পূর্ণ পরিবেশ, গভীর পড়াশুনার জায়গা, ইলম ও আমলের সুন্দরতম মিলনক্ষেত্র। আমাদেরকে নজর রাখতে হবে- যাতে কওমি মাদ্রাসায় আদব আখলাকের শৃংখলা ভঙ্গ না হয়। কওমি মাদ্রাসায় মোবাইলের অপব্যবহার রোধ করতে হবে। সম্মানজনকভাবে কওমির ছাত্রদেরকেও ভিসা নিয়ে বহির্বিশ্বে গমনের সুযোগ করতে হবে।
পরামর্শ সভায় বক্তারা বলেন, কওমি মাদ্রাসা বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত নীতিমালা এবং ভর্তির সময় যেসব ওয়াদা ছাত্ররা করে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য তথাকথিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হবে না, এমন ওয়াদাও থাকতে হবে। প্রত্যেক মাদ্রাসায় যথাযথভাবে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। ছাত্র বা শিক্ষক এই নীতি ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আলোচনা মুহতামিমরা বলেন, দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, মাদ্রসা বন্ধ রাখা অনুচিত। রমজানের পর মাদ্রাসা কার্যক্রম চালু করতে সরকার, কওমি মাদ্রাসা বোর্ড এবং মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যৌথ উদ্যোগী হওয়া জরুরি।
দুই অধিবেশনের এই পরামর্শ সভায় কওমি মাদ্রাসার বর্তমান পরিস্থিতি এবং আগামীর কর্ম পদ্ধতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন আলোচকরা।
তাহাফ্ফুজে মাদারিসে কওমিয়া বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা ইয়াহয়া মাহমুদ, যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান ফয়েজি, মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজী, ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন, মাওলানা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ হাসান, মুফতি মিনহাজুদ্দীন, কবি ও গবেষক সৈয়দ মবনু, মাওলানা আকরাম হুসাইন, মাওলানা আব্দুল হক কাওসারি, মাওলানা কামরুজ্জামান, মাওলানা আজিজুর রহমান, মাওলানা শহিদুল্লাহ কাসেমী প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।