মুক্তাগাছায় জমির জবর দখলের পায়তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীসহ হুমকির অভিযোগ

ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার : ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় জমির মালিক না হয়েও ভুয়া মালিক সেজে জমি দখলের পায়তারা করছে একটি মহল। প্রতি পক্ষ হতদরিদ্র একটি পরিবারকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে।ঘটনাটি ঘটেছে মুক্তাগাছা উপজেলার ৯নং কাশিমপুর ইউনিয়নের নামা মহিষতাঁরা গ্রামে।

বিবরণে জানা যায়, নামা মহিষতাঁরা গ্রামের মৃত কাঙ্গু শেকের তিন পুত্র যথাক্রমে এশার উদ্দিন, বিশা শেখ, লেচু শেক। অন্যদিকে তার ভাই বাঙ্গু শেকের দুই পুত্র নজর শেক ও আজগর শেক। জীবদ্দশায় তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি প্রায় সবটুকুই বিক্রি করে দেয়। নজর শেকের চার কন্যা তাদের বিভিন্ন জায়গায় বিয়ে হয়। তারা যার যার মতো স্বামীর সংসার করছে। নজর শেকের মৃত্যুর আগে তার সমূদয় সম্পত্তি অন্যত্র বিক্রি করে মাত্র দুই শতাংশ জমি রেখে মারা যান। যার বিআরএস খতিয়ান নং ৮৮৬। দাগ নং-৬৮৯৭। মৌজা-মহিষতাঁরা, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহ। নজর শেকের জমি যাদের কাছে বিক্রি করেছে তাদের নামে বিআরএস রেকর্ড সম্পন্ন হয়েছে। নজর শেকের রেখে যাওয়া দুই শতাংশ জমি তার তিন কন্যা যথাক্রমে দু:খ বেগম, রোকেয়া বেগম ও জমিলা এবং তার স্ত্রী জয়গুন বেওয়ার নামে রেকর্ড হয়।

পক্ষান্তরে কাঙ্গু শেকের তিন পুত্রের মধ্যে বিশা শেকের সাত ছেলে। বিশা শেকের সাত ছেলের মধ্যে আইনউদ্দিন পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সোয়া তিন শতাংশ জমি সহ লেচু শেকের জমির ওয়ারিশের কাছ থেকে দাগ নং ৬৮৯৪, ৬৮৯৫, খতিয়ান নং-২৯৫, ১৩ শতাংশ ও ৭ শতাংশের কাতে মোট পৌনে ১০ শতাংশ জমি দলিল মূলে ক্রয় করেন। মৌজা-মহিষতাঁরা, মুক্তাগাছা। কাঙ্গু শেকের পুত্র এশার উদ্দিন এর ছেলে আহেদ আলী ১০ শতাংশ বিআরএস রেকর্ড মূলে মালিক হন। তার কাছ থেকে রেওয়াজ মূলে সাড়ে ১০ শতাংশ জমির মালিক হন আইনউদ্দিন। যার বিআরএস দাগ নং ৬৮৯৩, খতিয়ান নং-৫০০, জমির পরিমাণ সাড়ে ১০ শতাংশ এওয়াজ মূলে মালিক এবং একই দাগে আইনউদ্দিনতিন শতাংশ লেচু শেকের পুত্র আবুল হোসেন এর কাছ থেকে ক্রয় করে। আইনউদ্দিন আবুল হোসেন কাছ থেকে আরো চার শতাংশ জমি ক্রয় করে যার বিআরএস খতিয়ান ১৬ দাগ নং- ৬৮৯৫।

সকল কাগজ পত্র বৈধ থাকা সত্ত্বেও বাঙ্গু শেকের নাতনী নজর শেকের কন্যা রোকেয়া বেগম একটি কুচক্রি মহলের প্ররোচনায় একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে আইনউদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজনদের হয়রানী করছে। রোকেয়া বেগম ২০১৫ সালে ময়মনসিংহ বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আইনউদ্দিন গংদের বিরুদ্ধে ১০৭/১১৭ ফৌ:কা:বি: ধারায় হয়রানীর উদ্দেশ্যে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-১০৮৬/১৫। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি পর্যালোচনা করে খারিজ করে দেন। চার বৎসর পর কুচক্রি মহলের প্ররোচনায় ১০৭/১১৭ (সি ধারায়) ময়মনসিংহ বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মুক্তাগাছা অঞ্চল আদালতে আরেকটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন যাহা বিচারধীন যার নম্বর ২৪৫/২০১৯। মামলার স্বাক্ষীরা আগের মামলায় স্বাক্ষীরাই এবং তার আত্বীয় স্বজনরাই। অন্যদিকে মিথ্যা এবং ভুয়া জমির মালিক সেজে ৫০ শতাংশ জমির মালিকানা দাবী করে রোকেয়া বেগম ময়মনসিংহ বিজ্ঞ ল্যান্ড ট্রাইবুনালে মামলা করেন। যার নং-২৮৩৩/২০১৩।

এদিকে কুচক্রি মহলের সাথে এবার একটি প্রভাবশালী মহলের যোগসাজুসে রোকেয়া বেগম ও তার লোকজন আইনউদ্দিন কে এবং তার পরিবারের লোকজনদের জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। জমি না লিখে দিলে তাদের বড় ধরনের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে আইনউদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। যে কোন সময় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীসহ বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। রোকেয়ার ভাড়া করা লোকজন দেশিয় অস্ত্রসহ রাতের বেলায় তাদের বাড়ীর আশে পাশে ঘুরাফেরা করছে বলে আইনউদ্দিন এ প্রতিবেদককে জানান। পথে ঘাটে যে কোন সময় তাদের উপর আক্রমন হতে পারে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ভুক্তভোগী আইনউদ্দিন।