জলে ভেসে গেছে রাসেলের স্বপ্ন

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঝড় ইয়াসের কারনে জোয়ারে অনেক বেশী পানি হওয়ায় ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। চোহের সামনে লাখ লাখ টাহার মাছ পানির সাথে যাইতে দেহায় মাছের সাথে আমিও ভেসে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু শিশু সন্তানের কথা মনে পরায় আজো বেঁচে আছি।আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন বরগুনার তালতলী উপজেলার খোট্রারচর গ্রামের বাসিন্দা রাসেল হাওলাদার।  ২০১৭ সালে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই এর কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান হৃদয়ে মাটি ও মানুষ প্রতিবেদন দেখে দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকার রাসেল মিয়া উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন।

এরপর বাড়ীর পাশে থাকা জমিটুকু বিক্রি করে ও কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় চার একর জমিতে মাছের ঘের ও তার পাশে সবজির বাগান করেন। কৃষি কাজে নতুন হলেও মোটামুটি সাফল্যের সম্ভাবনাই দেখছিলেন। সবজিতে গত দুই বছরে সামান্য কিছু লাভের মুখ দেখলেও মাছ বড় হলে লাভ হবে বলে আসা রাসেলের। পরে আর লাভ তো দূরের  কথা আসল পুঁজিই শেষ। সেখানে প্রকৃতিই বাঁধ সাধে। এ বছর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে যায়। এ ঘেরে প্রায় ১০ প্রজাতির দেশি বিদেশি মাছ ছিল। তার আসা ঘেরের মাছ বিক্রি করে প্রায় ৯-১০ লক্ষ টাকা পাবে, এ দিয়ে শোধ করবে ব্যাংকের ঋন।

রাসেলের সকল স্বপ্নই ভেসে গেছে জলে। কান্নাজনিত কন্ঠে রাসেল মিয়া বলেন, ২০১৭ সালে পিতার পাওয়া জমিটুকু বিক্রি করে ও কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় চার একর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ঘের ও তার পাশে সবজির বাগান করি। এতে লাভের মুখ দেখতে না দেখতেই গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারনে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। আর এবার জোয়ারের পানিতে আমার সকল স্বপ্নই ভেসে গেছে। মাছের সাথে আমিও ভেসে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু সন্তান ও পরিবারের কথা চিন্তা করে আজো বেঁচে আছি। বেড়িবাধের বাহিরে মাছ চাষ করে আজ আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। বর্তমানে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন রাসেল মিয়া।

একই অবস্থা চর এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ মাছের ঘের মালিক ইসমাইল প্যাদার। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, ৭.৫০ একর জমিতে মাছের ঘের ছিল তার। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এর কারণে গত বছর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ বছর কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ করে মাছের ঘের করেছিল। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তার ঘের তলিয়ে সব মাছ ভেসে গেছে।ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকার। এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে তালতলী উপজেলায় ৬৯৯ টি ঘের ও পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। মৎস্য চাষীদের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।