ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার; ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা হাতিল গ্রামে কবরস্থান জবর দখল
করে বসত ঘর নির্মানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানাযায়, উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের হাতিল
উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত শুকুর মামুদের পুত্র তারা মিয়া গংদের পৈত্রিক বাড়ি-ভিটা সংলগ্ন হাতিল মৌজার
বিআরএস খতিয়ান নং ৩৪৯, দাগ নং ৬৪৬ এ ১০শতাংশ জমিতে তাদের পারিবারিক কবরস্থান। উক্ত
কবরস্থানটি তারা ৫০ বৎসর যাবৎ পরিবারের মৃত লোকদের দাফন করে আসছে। কবরস্থানে তাদের প্রতিবেশী
মৃত লাল মামুদের পুত্র মোঃ আসকর আলী গত ৬/৭ মাস পূর্বে কবরস্থানের জমি জবর দখল করে পাকা বাড়ির
নির্মানের কাজ শুরু করেন। এ ব্যাপারে আসকর আলী মুক্তাগাছা থানায় অভিযোগ করলে বিষয়টি নিয়ে
থানা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, নেতৃবৃন্দ ও গ্রাম্য হিতৈষী মাতাব্বারগণ, মুক্তাগাছা
পৌরসভার কাউন্সিলর নিয়ে উদ্যোগি হয়ে বিষয়টি সততা যাচাই করেন। সালিশীগণ ঘটনার সততা পান
এবং জরব দখলের বিষয়ে আংশিক জবর দখল ও জবর দখলেরর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে মতামত দেন। উক্ত ঘটনার
বিষয়ে সালিশ অমান্য করে আসকর আলী পুনরায় কাজ শুরু করেন। পরে সালিশীর পরামর্শে তারা মিয়া জেলা
ময়মনসিংহের বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেন। মামলা নং সিআর ৭২১/২১, তারিখ ০৩/০৬/২০২১ইং। বিজ্ঞ আদালত
উক্ত বিতর্কিত জমির ওপর ১৪৪ ধারা নোটিশ জারি করেন। বিজ্ঞ আদলত ০৭/০৬/২০২১ইং তারিখে মুক্তাগাছা
উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী নায়েব আলী খানকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে
তদন্ত কর্মকর্তা গত ২৯/০৬/২০২১ ইং তারিখ তার তদন্ত প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে জমাদেন। তদন্ত
প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, বিবাদীগণের মতে ও তাদের স্বাক্ষীদের মতে উল্লেখ করেন ৩৪ বৎসর যাবৎ
উক্ত জমিতে বসবাস করছেন আসকর আলী। বাস্তবে ৬/৭মাস পূর্বে তার পূর্বের বাড়ি-ভিটা বর্তমান
অবস্থান থেকে দেড়শ গজ দক্ষিণে অবস্থান ছিল। যার আলামত এখনও রয়েছে। বাড়ির লোকজন উপস্থিত হয়ে
একথা জানান। প্রকৃতপক্ষে ৬/৭মাস পূর্বে তার আগের বাড়ি ভিটা থেকে পুরাতন টিনের ঘর ভেঙ্গে এনে
এখানে জবর দখল বসবাস শুরু করেন। তৎসংলগ্ন জনসাধারনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে কবরস্থানের উপর পাকা
ঘর তৈরি করার চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে ঘরের কাজ অনেকটা এগোলেও আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কাজ
বন্ধ রয়েছে। বাদি তারা মিয়া, এলাকার সাবেদ আলী, হিরা মিয়া, বিল্লাল হোসেন, মহর আলী, মৃত হযরত
আলীর স্ত্রী হালেমা (৭০) জানান, এ কবরস্থানে আমার স্বামী, ছেলে ও মেয়েকে কবর দেওয়া হয়েছে। তারা
মিয়ার মা আছিরন বেওয়া (৯০) জানান, এটা আমাদের পারিবারিক কবরস্থান, কবরেরস্থানের পাশদিয়ে
যাতায়তের রাস্তা ছিল। কবরস্থানে তাদের পূর্ব পুরুষসহ পরিবারের ৪০/৫০ জন মৃত ব্যক্তিকে এখানেই কবর
দেওয়া হয়। আসকর আলী কবরস্থান জবর দখল করে বড়ি নির্মান করছে এবং রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। ইউপি
সদস্য লুৎফর রহমান জানান, জমির মূল মালিক তারা মিয়ার পিতা মৃত শুকুর আলী। তার নামে বিআরএস
খতিয়ান ৩৪৯, ৬৪৬ নং দাগে কবরস্থান উল্লেখ করা আছে। অথচ তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তে এসে আমাদের কারও
কাছে, এলাকার কোন গণ্যমান্য ব্যক্তি এমনকি যারা সালিশ করেছেন তাদেরকে কোন প্রকার জিজ্ঞাসা না
করে তার ইচ্ছা মনগড়া প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী নায়েব
আলী জানান, বিবাদী ও স্বাক্ষীদের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। আরওআর, সিএস
খতিয়ানে কবরস্থান লেখা নাই। উল্লেখ্য ১৯৮৫ সালে অত্র এলাকায় ভূমি জরিপ (বিআরএস) কার্যক্রম
সম্পন্ন হয়। ৪০/৫০ বৎসর পূর্বে যদি কবরস্থান স্থাপিত হয় তাহলে আরওআর ও সিএস খতিয়ানে কবরস্থানের
নাম না উঠাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল। এব্যাপারে বৃদ্ধ আছিরন বেওয়া তার স্বামী সন্তানদের
কবরস্থান রক্ষায় সু-বিচার পাওয়ার জন্য বিজ্ঞ আদালতের নেক দৃষ্টি কামনা করেছেন।