বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স দ্রুত জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (৬ জুলাই) দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
প্রিন্স বলেন, বিএনপি অবিলম্বে অপরিকল্পিত ও সমন্বয়হীন লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন শ্রমিক, হকার, দোকান কর্মচারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুরসহ নিম্ন ও কর্মহীন মানুষের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য ও অর্থসহায়তা পৌঁছে দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে। একইসঙ্গে দ্রুত সবাইকে করোনা টিকা প্রদানসহ বিরাজমান করোনা চিকিৎসা সংকট নিরসনে সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন, হাইফ্লো ক্যানুলা ন্যাজাল, ভেন্টিলেটর, আইসিউ বেড স্থাপন এবং চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগসহ সরকারি খরচে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারের চলমান লকডাউনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ। লকডাউনে কাজ না থাকায় ছেলে-মেয়েদের মুখে ভাত তুলে দিতে না পেরে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার উত্তর মুক্তারপুর এলাকায় নিজ বাড়িতে দিনমজুর দ্বীন ইসলাম আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। নির্মম ও বেদনাদায়ক এ ঘটনাটি ঘটেছে গত ৪ জুলাই দুপুরে। অথচ সরকারের মন্ত্রী-কর্মকর্তারা হরহামেশাই বলে যাচ্ছেন, তারা পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করেছেন, কেউ না খেয়ে নেই, না খেয়ে মারা যাবে না কেউ ইত্যাদি ইত্যাদি। এ দায় কার? অবশ্যই এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।
ভুক্তভোগী এ পরিবারকে বিএনপির পক্ষ থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে জানান প্রিন্স।সরকারের চরম ব্যর্থতায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের দিনের রেকর্ড ভঙ্গ করে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে। জ্যামিতিক হারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির এ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে জনগণ এখন দিশেহারা হয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে।
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, সরকার করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে সহায়তার নামে যে বরাদ্দ দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা জনগণের সঙ্গে তামাশা করা ছাড়া কিছুই নয়। ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত যে কবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা কোনো সময় মাথাপিছু ১১ পয়সা কিংবা ১৪ গ্রাম চাল। চলমান লকডাউনে যে বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে তা মাথা পিছু ৭ দিনের হিসাবে ১৩ টাকারও কম। এখন বলা হচ্ছে ঈদের আগে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হবে, তাহলে ঈদের আগ পর্যন্ত এই লকডাউনে মানুষ কি খেয়ে বাঁচবে। প্রকৃত অর্থে, এ বরাদ্দও এখন পর্যন্ত ছাড় হয়নি এবং তা জনগণের হাতে পৌঁছেনি। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, গরিবের হক নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা লুটের মহোৎসব চালাচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা তাদের ব্যর্থতা আড়াল করতে প্রতিদিনই বিএনপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। এসব কথা বলে তারা দেশের যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তা থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে ব্যর্থ অপচেষ্টা করছেন।
বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রিন্স বলেন, আওয়ামী লীগ ডুবন্ত জাহাজ, ডুবন্ত জাহাজে কেউ যায় না। ডুবন্ত জাহাজ থেকে বাঁচার জন্য নেমে পড়ে সেখান থেকে।