লালমনিরহাটে মিথ্যা মামলায় এক কিশোরকে ফাঁসানোর অভিযোগ

লালমনিরহাটে ইব্রাহিম (২০) নামে এক কিশোর (ছাত্র) কে মিথ্যা নারী ও শিশু নির্যাতন
মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে ইব্রাহিমের বাবা নুরজামাল সাংবাদিকদের অভিযোগ
করেন। মামলার বিবরণ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় যে, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী
উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের তালুক হরিদাস (গিলাবাড়ী) ৬নং ওয়ার্ডের আলম মিয়ার
মেয়ে শরিফা খাতুন (১৬) এর সহিত সারপুকুর চওড়াটারী গ্রামের নুরজামাল এর পুত্র
ইব্রাহিম (২০) এর সহিত দীর্ঘ ০৪ মাস আগে প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়।
শরিফা খাতুন গত ৬ই জুলাই আদিতমারী থানায় উপস্থিত হয়ে ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে নারী
ও শিশু নির্যাতন এর অপরাধে একখানা অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে শরিফা খাতুন
বলেন, যে দীর্ঘ ০৪ মাস যাবত আমরা একে অপরকে ভালোবেসে আসিতেছি। তার এক
পর্যায়ে গত ১৪ই জুন রাত ৯টায় ইব্রাহিম আমাকে ফোন করে ডাকে, আমার বাড়ীর
৩০০ গজ দুরে একটি পাট ক্ষেতে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমার শরীরের ও বুকের এবং শরীরের
স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয়। কিন্তু এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে উক্ত অভিযোগের কোন
সত্যতা পাওয়া যায়নি। ঘটনার মূল বিষয় হচ্ছে আলমের মেয়ে শরিফা খাতুন (১৬),
নুরজামালের পুত্র ইব্রাহিম (২০) এর সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় এবং কথাবার্তা
হয়। কথাবার্তার এক পর্যায়ে শরিফা ইব্রাহিমকে বিয়ে করতে বলে। তখন ইব্রাহিম
শরিফার কথা শুনে শরিফাকে বলে যে, আমি তোমার ভালো বন্ধু হতে পারি, আমি তোমাকে
বিয়ে করতে পারব না বা ভালোবাসতে পারব না। কারণ আমার এখনও বিয়ে করার বয়স হয়
নাই। আমি এখনও ছাত্র। তাই আমার পক্ষে তোমাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়। সেই কথা শুনে
শরিফা ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের ইচ্ছায় ইব্রাহিমের বাড়ীতে গিয়ে বিয়ের কথা বলার জন্য
বাড়ীতে ঢুকতে চায়। তখন এলাকাবাসী শরিফাকে ইব্রাহিমের বাসায় ঢুকতে না দিয়ে
অত্র ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদকে খবর দেন। খবর পেয়ে ইউপি সদস্য
আবুল কালাম আজাদ তাৎক্ষণিক ইব্রাহিমের বাড়ীতে আসেন। এসে আশেপাশের
লোকজনের মুখে সবকথা শুনে শরিফাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বলে, যে তোমার এখনও বয়স
হয়নি তোমার বয়স মাত্র ১৬। এই বয়সে এরকম পাগলামী করিও না। তখন উক্ত ইউপি সদস্য
আবুল কালাম আজাদ শরিফাকে সঙ্গে নিয়ে তার বাসায় গিয়ে তার বাবা-মার হাতে তুলে
দিয়ে আসেন। ইব্রাহিমের বাড়ীতে ঢুকতে না পারায় শরিফার বাবা ক্ষোভে ও যন্ত্রণায় তার
মেয়েকে দিয়ে আদিতমারী থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। সরেজমিনে
গিয়ে আরও জানা যায় যে, উক্ত অভিযোগে যে দুইজনকে স্বাক্ষী করা হয়েছে জয়নাল (৪৮),
পিতা-কপুর ও হাবিবুর (৪০), পিতা-নুরুল হক এরা অত্র এলাকায় এ রকম বিভিন্ন মামলায়
টাকার কারণে স্বাক্ষী হন। প্রকৃত অর্থে ইব্রাহিম ঐ দিন শরিফাকে যে ফোন নম্বর
দিয়ে ডেকে ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে সে নম্বরটি হলো-০১৮৮৫-৮৮৯৬৩০। এই
নম্বরটি কখনও ইব্রাহিম ব্যবহার করেননি বা ঐ দিন শরিফাকে কোন পাটক্ষেতে নিয়ে
যায়নি বা শরিফার শরীরে হাত দেননি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট ও
উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসানো হচ্ছে বলে ইব্রাহিমের বাবা কান্নাজড়িত কন্ঠে
সাংবাদিকদের বলেন। উল্লেখ্য যে, উক্ত মামলার তদন্ত করার জন্য আদিতমারী থানার এস.আই
কাওছার আহম্মেদ ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এবং মামলাটির তদন্ত করে এসেছেন। এ
ব্যাপারে আদিতমারী থানার ও.সি (তদন্ত) সাহেবের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি
সাংবাদিকদের জানান যে, শরিফার বাবা একটি অভিযোগ দিয়েছে এবং বলেছে যে
তাকে উপরে উল্লেখিত মোবাইল নম্বর দিয়ে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পাটক্ষেতে নিয়ে
যায়। আমরা সেই নম্বরটি খতিয়ে দেখছি এবং মামলাটি পর্যালোচনা ও ভালো ভাবে তদন্ত

করে দেখছি। তদন্ত করে অপরাধ প্রমাণিত হলে আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ
করা হবে।