মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞঃ মেয়র টিটু

ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকারঃ ময়মনসিংহবাসীকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে স্বপ্নের সিটি কর্পোরেশন উপহার দিয়েছেন সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ । তিনি বলেন, ময়মনসিংহ শহরকে বর্জ্যমুক্ত করার প্রত্যয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
করোনা মাহমারির কারনে আমাদের কিছু উদ্যোগ বিলম্বিত হয়েছে। তবে আমরা ইতোমধ্যে দৃশ্যমান কিছু পরিবর্তন আনতে সামর্থ হয়েছি।

সিটি কর্পোরেশনের তথ্য মতে, দ্রুত নগরায়ন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং পাশ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষের নগরমুখী প্রবণতায় ময়মনসিংহ
শহরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে বর্জ্যের পরিমান। ময়মনসিংহ শহরে প্রতিদিন উৎপাদিত বর্জ্যের পরিমান প্রায় ৪০০ টন। এ বর্জ্যের
অপসারনের দায়িত্বে রয়েছে দেশের নবীনতম সিটি কর্পোরেশন-ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন (মসিক), পরিচালিত হচ্ছে পূর্বের তুলনায় প্রায় ২ গুণ বর্ধিত আয়তনের বিলুপ্ত পৌরসভার জনবল নিয়ে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু। তার উদ্যোগে এ বছর ফেব্রুয়ারি থেকে সিটিতে চালু হয়েছে রাত্রীকালীন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। এতে নাগরিকগণ সন্ধ্যা থেকে রাত ১০ টার মধ্যে নির্ধারিত স্থানে বর্জ্য ফেলছেন এবং রাতের মধ্যেই তা সরিয়ে নিচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। শহরের ৫০ টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে সিসি টিভি ক্যমেরা এবং এ ক্যামেরা ফুটেজ দেখে  দিনের বেলা কেউ বর্জ্য ফেললে তাকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হচ্ছে।

এতে দিনের বেলা শহরের রাস্তা-ঘাট থাকছে বর্জ্যমুক্ত। বর্জ্যের ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বাড়াতে শম্ভুগঞ্জে অবস্থিত শহরের একমাত্র ডাম্পিং স্টেশনের আয়তন ৩ একর থেকে ৬ একরে বৃদ্ধি করা হয়েছে। ডাম্পিং স্টেশনের ভেতরে একটি রাস্তা নির্মাণ করে এখন বর্জ্যকে ডাম্পিং স্টেশনের ভেতরে নিয়ে ফেলা হচ্ছে এবং নির্মাণ করা হচ্ছে সীমানা প্রাচীর। আর এতে বদলে গেছে শম্ভুগঞ্জ ডাম্পিং স্টেশনের চারপাশের চিরচেনা আবর্জনাময় চেহারা। এছাড়া সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও দুটি ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা সিটি কর্পোরেশনের রয়েছে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় টেকসই সমাধানে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন। এ
সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নগরীতে প্রতিদিন উৎপাদিত বর্জ্যের
পুরোটাই বিদ্যুৎকেন্দ্রেই ব্যবহৃত হবে যা শহরকে করবে বর্জ্যশুন্য।

মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। শহরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে তা
আকুয়ায় স্থাপিত প্ল্যান্টে ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে। শহরের মানব বর্জ্য সংগ্রহ করে তা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বছরে প্রায় ১৪ শত
টন জৈব সার উৎপাদন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আমিন কালাম বলেন, রাত্রীকালীন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগে শহর পূর্বের তুলনায় অনেক পরিচ্ছন্ন দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে নগরবাসী একটি পরিচ্ছন্ন সকাল পাচ্ছেন। তবে এ বিষয়ে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। না হলে এ রকম একটি ভালো উদ্যোগও ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে।

মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু জানান, ময়মনসিংহ শহরকে বর্জ্যমুক্ত করার প্রত্যয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। করোনা মাহমারির কারনে আমাদের কিছু উদ্যোগ বিলম্বিত হয়েছে। তবে আমরা ইতোমধ্যে দৃশ্যমান কিছু পরিবর্তন আনতে সামর্থ হয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে স্বপ্নে ময়মনসিংহবাসীকে সিটি কর্পোরেশন উপহার দিয়েছেন সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।