চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সংবাদ সংগ্রহে ছুটে গিয়েছিলেন সাংবাদিক ঝ্যাং। করোনার সংক্রমণ প্রথম প্রকাশ্যে এনে সারা বিশ্বের নজর কেড়েছিলেন তিনি। কীভাবে সেখানে করোনায় আক্রান্ত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে সে ছবি তুলে ধরেছিল ঝ্যাং। আর সে কারণেই কারাগারে যেতে হয় তাকে। সেখানে অনশন ধর্মঘট করে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন ৩৮ বছর বয়সী সাংবাদিক ও সাবেক আইনজীবী ঝ্যাং ঝান।
কারাগারে অসুস্থতার খবর প্রকাশের পর জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা সাংবাদিক ঝ্যাংয়ের মুক্তির দাবি করে। জাতিসংঘের এমন দাবিকে দায়িত্বহীন অভিহিত করে তীব্র সমালোচনা করেছে চীন।
জেনেভায় চীনা মিশন শনিবার ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, সাংবাদিক ঝ্যাং সম্পর্কে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) থেকে যে মন্তব্য করা হয়েছে তা দায়িত্বহীন ও ভুল।
ওএইচসিএইচআরের মুখপাত্র মার্তা হুর্তাডো শুক্রবার জানান, চীনের কারাগারে বন্দি ৩৮ বছর বয়সী সাংবাদিক ঝ্যাংয়ের শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতি হচ্ছে। কারগারে দীর্ঘদিন অনশন করায় তার জীবন গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
মানবিকতার জন্য, তার জীবনকে বাঁচানোর তাগিদে ও তার সম্মানের কথা বিবেচনা করে হুর্তাডো এক বিবৃতিতে ঝ্যাংকে দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানান।
২০২০ সালের মে মাসে আটক করার পর ডিসেম্বরে ঝগড়া ও বিশৃঙ্খলা উস্কে দেওয়ার জন্য তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় সাংবাদিক ঝ্যাংকে। ভিন্ন মত দমনের জন্যই তাকে এ দণ্ড দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
জেলের মধ্যেই প্রতিবাদ হিসেবে আমরণ অনশন শুরু করেন তিনি। এরই মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় কারাগারে কেটে গেছে তার। ঝ্যাংয়ের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। তাকে জোর করে টিউবের মাধ্যমে খাওয়ানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি বলে দাবি তার পরিবারের।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য চীনা প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানিয়েছে। শুধু ঝ্যাং নয়, উহানের খবর প্রকাশ করতে যাওয়া আরও তিন সাংবাদিক চেন কুইশি, ফ্যাং বিন এবং লি জেহুয়াকেও আটক করেছিল চীনা প্রশাসন।