যুবলীগে সম্রাট জনপ্রিয়তার এক অনন্য নজির গড়েছিলো। লাখ লাখ ভক্ত অনুরাগী নিয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় তার পদচারণা অনেকের মাথা ব্যথার কারণ ছিলো। কেউ কেউ বলছিলো তার মেয়র ইলেকশন করার বাসনা ছিলো। আসলে রাজনীতি করলে এমপি, মন্ত্রী, মেয়র কিংবা দলীয় অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি সেক্রেটারি হওয়ার বাসনা থাকাটা স্বাভাবিক। একজন রাজনীতিবিদকে পদপদবী পূর্ণতা দেয়।স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু যদি প্রেসিডেন্ট না হতো তা হলে তার রাজনীতি পূর্ণতা পেতো না। জনগণও অন্য কাউকে মেনে নিতো না।
ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ছাত্র রাজনীতিতে সম্রাটের কোনো অবস্থান ছিলো কিনা তা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।থাকলেও তা হয়তো উল্লেখ করার মতো কিছু ছিলো না।হঠাৎ সবাই সম্রাটের নাম শুনতে শুরু করলো কেননা লাখের বেশি কর্মি সমর্থক একই টিশার্ট কিংবা টুপি পরে সম্রাটের নেতৃত্বে জনসভায় যোগ দিতো।আচ্ছা বলেনতো এক লাখ টিশার্ট এবং টুপির দাম কতো হতে পারে?? টুপি যদি ৩০-৪০ টাকা ধরেন এবং টিশার্ট যদি ৮০-৯০ টাকাও ধরেন তাহলেও সম্রাটের খরচ পরছিলো ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। সাথে যদি বিরাণীর প্যাকেট যোগ করি তাহলে আরও ১.৫ কোটি টাকা। তার সাথে গাড়ি ভাড়া এবং অন্যান্য খরচ যোগ করলে হবে আরও অন্তত ১ কোটি।তাহলে মোটামুটি একেকটা জনসভায় সম্রাটের কর্মী আনতে কমপক্ষে ৩-৪ কোটি খরচ পরছে।সম্রাট জমিদারের ছেলেও ছিলো না কিংবা তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জবরদখল, ভূমিদস্যুতার অভিযোগও ছিলো না।অভিযোগ কি? ক্যাসিনো চালানো।জুয়ার আসর বসিয়ে টাকা কামানো।সম্রাটের আহামরি কোনো সম্পদের হিসাবও কেউ দিতে পারে নাই। কারণ সম্রাট জুয়া থেকে কামাইছে আর দলের পিছনে খরচ করছিলো।কর্মীর যোগান দিয়েছিলো।জনসভাকে কানায় কানায় ভরে দিয়েছিলো।টাকা খরচ করেও সবাই মানুষ জোগাড় করতে পারে না।আমাকে ১ কোটি টাকা দিয়ে যদি বলে ১ হাজার লোক নিয়ে নেতৃত্ব দিয়ে জনসভায় যেতে। আমি এক হাজার লোক টাকা দিয়েও যোগাড় করতে পারবো না।
সম্রাট এনু,রুপমদের মতো ক্যাসিনো দিয়ে পয়সা কামিয়ে নিজেদের সম্পত্তি কিংবা ব্যাংক ভরেনি।সে দলের পিছনে,কর্মীদের পিছনে ঢেলেছে।সে কর্মী তৈরি করেছে,অনুরাগী তৈরি করেছে।আপনি যদি বিরোধী মতাদর্শে বিশ্বাসী একজনকেও আপনার দলীয় জনসভায় ২-৪ বার নিয়ে যান সে আপনার দলের অনুরাগী হয়ে যাবে।দলের বক্তৃতা শিল্পীরা অনুরাগী হতে বাধ্য করবে।আচ্ছা ভাবুনতো সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বক্তৃতা করছেন আর তা শুনে আপনি মুগ্ধ হবেন না তা কি হয়!! মাঈনুদ্দীন খান বাদল বক্তৃতা করছেন তা শুনে মুগ্ধ না হওয়ার উপায় আছে!!আব্দুর রাজ্জাক,তোফায়েল আহমদ কিংবা আব্দুল জলিল বক্তৃতা করছেন আর তা শোনার পরও আপনার আওয়ামী লীগের প্রতি প্রেম জাগবেনা তা কি হয়!!
সম্রাট মাঠঘাট থেকে মানুষ ধরে এনে আওয়ামী লীগের অনুরাগী বানিয়েছেন এটাই তার স্বার্থকতা।
আচ্ছা শুধু সম্রাটকে নিয়ে এতো টানাটানি কেনো?? যুবলীগের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ একই ছিলো। কই তার কথা তো এখন সবাই ভুলে গেলো।সেও হঠাৎ করে যুবলীগের চেয়ারম্যান হয়েছিল। এর আগে ভায়রার দলের নেতা ছিলো,মানে আন্দালিব রহমান পার্থের বাবা নাজিউর রহমান মঞ্জুর দল করতো।কখন যে উনি আওয়ামীলীগার হলেন কিংবা যুবলীগের চেয়ারম্যান হলেন সব আলাদীনের যাদুর চেরাগের মতো।
আমাদের বিচ্চুওতো চট্টগ্রাম আবাহনীকে জুয়ার আড্ডা বানিয়ে পয়সার পাহাড় বানালো,কই তারেতো কেউ কিছু কইলো না।যত দোষ সম্রাট ঘোষ।
যুবলীগটা শেখ সেলিমের কব্জায়।শেখ সেলিমের ইচ্ছাই যুবলীগে সব।আমরা জানতাম ছাত্রলীগ করে তারপর স্বেচ্ছাসেবকলীগ কিংবা যুবলীগ করার পর মূল দলে আসার কথা। শুধু জাহাঙ্গীর কবির নানক সব করে এখন প্রেসিডিয়াম সদস্য। বর্তমান যুবলীগের বেশিরভাগ নেতাদের ছাত্র রাজনীতির খোঁজ খবর নিলে সর্বনাশ।সব দেখবেন অনেকটা এনু,রূপম।
যুবলীগের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট খুব সম্ভবত শেখ ফজলে নাঈম হবে।এখন তিনি যুগ্ম সম্পাদক। চট্টগ্রামে সম্মেলনে তিনি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। সভাপতি পরশ কিংবা নিখিল সাবকে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো নাঈমের চাইতে।বিশেষ করে নিখিল সাবকে এতিমের মতো মনে হইছে।উনি হুদাই সাধারণ সম্পাদকের পদে আছেন।উনারে কেউ গুরুত্ব দেয় না।শ্রেফ কাট পুটলি।সালাউদ্দিন ভাই কিংবা এম আর আজিম ভাই যুবলীগের চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি হওয়ার জন্য শেখ নাঈমের পিছনে পিছনে ঘুরবে আর তা দেখে মানুষ হাসবেনা তা কি হয়!!আচ্ছা রাজনীতি থেকে পরিবারতন্ত্র কখন যাবে!!!
ও হ্যাঁ সম্রাট কিন্তু অসুস্থতার নাটকটা আনোয়ার হোসেনের মতো করেছে।ধরার সাথে সাথে হার্টে হাত আর হসপিটাল ছাড়ার সাথে সাথে মাঠেঘাটে দৌড়ানো শুরু। এ জায়গায় সে সিনিয়র নেতাদের অভিনয় কেও হার মানিয়ে দিয়েছে। (রিয়াজ)
