ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার: ময়মনসিহ সদর উপজেলার বেগুনবাড়ী বাজার সংলগ্ন ফকির বাড়ী চর দরি কুষ্টিয়া এলাকার মৃত কেরামত ফকিরের পুত্র কাশেম হত্যা মামলা নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানাযায় কাশেম একাধিকবার হৃদ ক্রিয়া আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হন। তৃতীয় ধাপে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। কাশেম পরিবারের সাথে চর দরি কুষ্টিয়া এলাকার নাজিম উদ্দিনের পুত্র ফজলুল হকের সাথে ৪১শতাংশ জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয় ২০২০ সাল থেকে। মূলত জমি নিয়ে বিরোধে ফজলুল হক ও তার পরিবার ও তার বাড়ি ঘরে হামলা করে কাশেম গংরা।
হামলা করে তাদের বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট, ফসলের ক্ষয়ক্ষতিসহ গাছপালা কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটায় কাশেম গংরা। নিরীহ ফজলু পেশি শক্তিতে না পেরে আইনের আশ্রয় নিয়ে চলতে থাকে। কোনভাবেই ফজলুর সাথে পেরে উঠতে না পেরে কাশেমের স্বাভাবিক মৃত্যু কে হত্যা মামলা সাজিয়ে কোতুয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এব্যাপারে তথ্য সংগ্রহে জানা যায়, ফজলু কাশেমের বোন জামাই লাল মিয়া ফকিরের ছেলে মোবারকের কাছ থেকে ২০২০ সালে ৪১শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ফজলু যথারীতি উক্ত জমিতে চাষাবাদ করে আসছিল। পরবর্তীতে কাশেম আলী উক্ত জমি তার দাবী করে আদালতে মামলা করে। বিজ্ঞ আদালত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ফজলুর পক্ষে রায় প্রদান করেন।
ফজলু তার ছোট ভাই হাফিজ কে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যাগঞ্জ বাজারে যাওয়ার পথে গত ০৬/০২/২০২২ইং তারিখ পূর্বপরিকল্পিত ভাবে কাশেমের বাড়ির কাছে আসতেই তার নেতৃত্বে¡ ৫/৬ জনের সংঘবদ্ধ একটি দল ফজলু ও তার ভাইয়ের উপর আক্রমন করে তাদেরকে গুরুতর জখম করে নগদ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এব্যাপারে আদালতে মামলা হয় যার নং সিআর ২২৩/২০২২, যাহা চলমান।
গত ০৭/০৫/২০২২ তাং সকাল সড়ে ১০টায় ফজলু বেগুনবাড়ি বাজারে আসার পথে সোলেমানের দোকানের কাছে আসতেই হাতেমসহ তার লোকজন তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কোপ দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হয়। এব্যাপারে কোতুয়ালী থানায় আরএকটি হত্যার চেষ্টা মামলা হয় যার নং ২২, তারিখ ১৭/০৫/২০২২। মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য হাতেমগংরা ফজলুর পরিবারকে হুমকি অব্যাহত রাখে।
এব্যাপারে ফজলু ময়মনসিংহ বিজ্ঞ আদালতে ১০৭/১১৭ ধারায় মামলা করে। এতে হাতেমগংরা আবার ক্ষিপ্ত হয়ে ফজলুদের বাড়ি ঘরে হামলা চালায়। বাড়িতে হাফিজুলের বৃদ্ধ বাবা ছাড়া আর কোন পুরুষ লোক না থাকায় মহিলাদের নির্যাতন, বাড়িঘর ভাংচুর, বৈদ্যুতিক মিটার চুরি, ফসল কর্তন এবং ষাটরোর্ধ বৃদ্ধ নাজিম উদ্দিনকে পিটিয়ে হাতপা ভেঙ্গে ফেলে। পরবর্তীতে বৃদ্ধকে বাঁচাতে ডাক্তার তার একটি পা কেটে ফেলে। উক্ত ঘটনায় বৃদ্ধের ছেলে হাফিজুল বাদি হয়ে কোতুয়ালী থানায় একটি মামলা করেন, যার নং ৯৮, ২৮/০৬/২০২২ইং।
এদিকে কাশেম গত ০৯/১০/২০২২ ইং তারিখ রাত অনুমান ২টায় নিজ বাড়িতে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায় বলে এলাকায় প্রকাশ। কাশেমের মৃত্যুকে পুঁজি করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ফজলু গংদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করেন।
যারা নিরীহ, চর এলাকার বাসিন্দা কাশেমদের বাড়ির পাশদিয়েই চলাচলের পথে তাদেরকে প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ভয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
বেগুনবাড়ি বাজারে উঠতে গেলেই কাশেমদের বাড়ির আঙ্গিনার রাস্তা দিয়েই যেতে হয়। কাশেম গংরা তাদের দলবল নিয়ে চর এলাকায় ফজলুদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট করতে যারা দ্বিধা করে না যাদের ভয়ে ফজলুরা সবসময় টটস্থ থাকে তাদেরকেই রাত ২টায় কাশেমকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে নদীর পাড়ে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার ঘটনা সাজিয়ে মিথ্যা মামলার অবতারণা করেছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন বলে ফজলুল হক ও তার পরিবারের লোকজনদের দাবি।
হাতেম গংরা যে অপরাধ করে আসছে সে মামলা থেকে বাঁচতে এ মিথ্যা হত্যা মামলার অবতারণা করেছেন জানান ফজলু গংরা।
কাশেম হত্যা মামলায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে, বাকী আসামিরা হাই কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আছেন।
এ ব্যাপারে কাশেম হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতুয়ালী মডেল থানার এসআই জহিরুলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, কাশেম হত্যা মামলাটি আমরা নিবিড় ভাবে তদন্ত করছি। ময়মনা তদন্ত রিপোর্ট পেলে হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু তা উদঘাটন হবে।