রুপান্তর বাংলা ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার দুল্লা বটতলা বাজারস্থ গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা (গ্রাউস) নামে এক এনজিওর নির্বাহী পরিচালক সাইয়েদুজ্জামান খোকনের বিরোদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানাযায়, গ্রাউসের নির্বাহী পরিচালক সাইয়েদুজ্জামান খোকন সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে অবৈধ ভাবে মাইক্রো ক্রেডিট অথরিটি রেগুলেরিটি (এমআরএ) অনুমোতি ব্যাতিরেকে ঋণ কার্যক্রম ও ডিপিএস আমানত পরিচালনা, অব্যাহতি প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ভাড়াটে লোক দিয়ে মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগি একাধিক কর্মকর্তা মুক্তাগাছা প্রেসক্লাবে এসে লিখিত ভাবে গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা (গ্রাউস) এর নির্বাহী পরিচালক খোকনের বিরোদ্ধে তার সকল অপকৃত্তির খতিয়ান তুলে ধরেন। শুধু তাই নয় ভাড়াটিয়া যে লোক দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়ে ছিলেন সেই করিম খা প্রেসক্লাবে এসে তাকে মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে ও তাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে খোকন নিরীহ ব্যক্তিদের নামে মামলা করিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।
সূত্রমতে, ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার দুল্লা ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামের মৃত এম এ সাত্তারের পুত্র মোঃ সাইয়েদুজ্জামান খোকন প্রায় ২০ বছর যাবত ময়মনসিংহ সমাজ সেবা অধিদপ্তর হতে গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা (গ্রাউস) নামে একটি এনজিও রেজিস্ট্রেশন নেয়। যার নং-ম-১০৪৫৮। সমাজসেবা মূলক কাজ করার শর্ত থাকলেও তিনি মূল প্রধান্য দিয়ে আসছেন দাদন ব্যবসায়। মুক্তাগাছার প্রত্যন্ত পাহাড়ী অঞ্চল এবং শিক্ষা অনগ্রসর ও দরিদ্র পীড়িত এলাকা হওয়ায় সাধারণ মানুষকে সহজেই ভ‚ল বুঝিয়ে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার লোভ দেখিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। দাদন গ্রহিতাদের কাছ থেকে তাদের এনআইডি কার্ড জিম্মী করে রাখে। সুদের টাকার জন্যে গ্রাহকদের উপর শারিরীব নির্যাতন করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরোদ্ধে। এবিষয়ে আদালতে মামলা হয়েছে যা চলমান। সাধারণ মানুষকে ১২বছরের নামে ডিপিএস খোলে তাদের আমানতের উপর ৫ বছরের পূর্বে কোন লাভ প্রদান করছে না। আবার ২ বছরের পূর্বে জমাকৃত টাকা ফেরত দেয়া হয় না। এমনকি প্রাথমিক ভাবে ২/৩ কিস্তি জমা দিয়ে আর জমা না দিলে জমানো সেই টাকাও গ্রাহককে ফেরত দেয়া হয় না। এভাবে গরীব মানুষের প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। গত ২০ বছরে টাকার কোন হদিস নেই সংস্থার হিসাবের খাতায় বলে লিখিত অভিযোগে জানাযায়।
গ্রাউস এর নির্বাহী পরিচালক খোকনের এসব অনিয়মের প্রতিকার না পেয়ে সংস্থার অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকুরী থেকে অব্যাহতি নিয়ে চলে যায়। সংস্থার শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, উপ-পরিচালক মোঃ সাইদুর রহমান ও ফিল্ড অফিসার মোঃ জুয়েল মিয়া চাকুরী ছেড়ে চলে যান এবং সকল হিসাব বুঝিয়ে দিয়ে নির্বাহী পরিচালকের স্বাক্ষর সম্বলিত ছাড়পত্র অফিস থেকে নিয়ে যান। কিন্তু পরবর্তীতে নির্বাহী পরিচালক খোকন মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে উল্লেখিত কর্মকর্তাদের বিরোদ্ধে মুক্তাগাছা থানায় ও আদালতে মামলা করে। এখানেই শেষ নয়। এদের বিরোদ্ধে ভাড়াটিয়া জনৈক করিম খা ও মুসলেম উদ্দিন নামে ব্যক্তিদের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করে এবং বেশী বাড়াবাড়ি করলে আরও মামলা দেয়ার হুমকি দেয়। উল্লেখ্য বাদী মোসলেম যাদের বিরোদ্ধে জমি নিয়ে বিরোধ দেখিয়ে মামলা করেছে তাদের বাড়ী শেরপুর জেলায়। প্রকৃত পক্ষে মোসলেমের কোন জমি নেই। সে শ^শুর বাড়ীতে বসবাস করেন। এ মিথ্যা মামলা করায় মোসলেম এলাকার জনরোষে খোকনের বাড়ীতে পালিয়ে অবস্থান করছে।
ভ‚ক্তভোগীরা জানান, খোকন এলাকায় মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত। প্রকাশ্যে তার বিরোদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। তাদের দাবী সরকারি আইন অমান্য করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিরীহ মানুষদের রক্ষায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত পূর্বক খোকনের বিরোদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা এবং সেই সঙ্গে গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা গ্রাউসের ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করার সরকারি অনুমোদন রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখার আবেদন জানান।
এব্যাপারে খোকনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, অব্যাহতি প্রাপ্তদের আমি কোন ছাড়পত্র দেয়নি, তারা জাল ছাড়পত্র বানিয়েছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দিয়েছি যা চলমান রয়েছে। তিনি জানান, কাউকে ভাড়া করে মামলা করা হয়নি। দাদন ব্যবসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোতি নিয়ে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন।
