=দীঘিনালা থেকে আব্দুল কাদের ≠=
বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল খাগড়াছড়ি রাঙ্গামাটি আর বান্দরবান জেলা। অপরূপ পাহাড়ি সবুজ সৌন্দর্যে ঘেরা এই তিন জেলার অন্যতম খাগড়াছড়ি। আর খাগড়াছড়ির সর্ব সৌন্দর্য মণ্ডিত দীঘিনালা উপজেলা। আম জাম কাঁঠাল লিচু কড়ই চাপালিস নানান ফল আর কাঠের গাছ সহ বিখ্যাত সেগুন কাঠের বাগান বেষ্টিত দীঘিনালা উপজেলা। পাহাড়ি আদিবাসী ও বাঙালির শান্তিপূর্ণ বসবাস এই জনপদে। লক্ষাধিক লোকের বসবাস এই পাহাড়ি জনপদে। দুর্ভাগ্য যে এই অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমির কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে উপজেলার পাঁচটি সনাতন পদ্ধতির ইট ভাটা। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য সনাতন পদ্ধতির চুঙ্গিওয়ালা ইট ভাটা স্থাপন,পরিচালনা ও ইট তৈরি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও এই পাঁচ ইট ভাটার মালিকগণ যেন আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বছরের পর বছর ভাটা পরিচালনা করে চলেছে। ভাটার জ্বালানির জন্য বনের কাঠ কেটে উজাড় করছে বন। মাটির জন্য পাহাড় কেটে ধ্বংস করছে পাহাড়। যদিও পাহাড় কেটে মাটি নেয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তবুও ইট ভাটার মাটি যোগান দিতে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব। অবাধে কাটা হচ্ছে তিন ফসলি জমির মাটিও। প্রশাসনের নাকের ডগায় এই সকল অরাজকতা চললেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ভাটা গুলো চলছে ইট ভাটার মালিক রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে। প্রশাসন আর স্থানীয় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে এই রাকিবুলের দুর্দন্ড দাপটে চলছে এই জনপদের পরিবেশ ধ্বংসযজ্ঞের মহোৎসব। ইট ভাটায় কাঠ পোড়ানো ফসলি জমির মাটি কেটে আনা পাহাড় কেটে পাহাড়ি পরিবেশ ধ্বংস করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও বনের কাঠ ফসলি জমির মাটি আর পাহাড় কেটে উজার করা হচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়।ইট ভাটার কালো ধোয়া আর কাঠ পোড়ানোর রাসায়নিক এলাকায় ছড়িয়ে পডার কারণে জনপদের জনস্বাস্থ্য এখন হুমকির সম্মুখীন। বিনষ্ট হচ্ছে পাহাড়ি সবুজ পরিবেশ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফল ও ফসলের মাঠ আর পাহাড়ের ঝুম চাষ। ভাটায় ইট পোড়ানো ছাই ফেলা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী নদী বা জলাশয়ে। ফলে এর বিষাক্ত রাসায়নিক পানিতে মিশে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছে। জনস্বাস্থ্য জন পরিবেশ এবং পাহাড়ি সবুজ পরিবেশ ফসল ফলাদি রক্ষার্থে এ সকল ইট ভাটা বন্ধ করা জরুরী হলেও নিশ্চুপ ঘুমিয়ে আছে উপজেলা প্রশাসন জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর। বেড়ায় যদি ক্ষেত খায় তাহলে ক্ষেত রক্ষা করবে কে? ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ সংশোধিত ২০১৮ অনুযায়ী আবাসিক এলাকা সংরক্ষিত ও বাণিজ্যিক এলাকা সিটি কর্পোরেশন পৌরসভায় এলাকা উপজেলা সদর ও ফসলি জমির উপর ইটভাটা স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও দীঘিনালার ইট ভাটার মালিকগণ আইনের তোয়াক্কা না করে জনবহুল এলাকায় রয়েছে তাদের ভাটাগুলো। ইট ভাটার মালিক রাকিবুল ইসলাম ও অন্যান্য মালিকদের টাকা খেয়ে ঘুমিয়ে আছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসন ও থানার ওসি বর্তমান ইউএনও এর দীঘিনালায় যোগদানের পর এযাবৎ মেরুংইউনিয়নের ১০-১২টি পাহাড় কেটে বিনাশ করা হয়েছে। রশিদ নগর মাদরাসার পাশের বিশাল পাহাড় কেটে ধ্বংস করা হয়েছে এই এলাকার পাহাড়ি বৈশিষ্ট্য। অথচ ইউএনও আরাফাতুল সাহেবের যেন ঘুম ভাঙছে না। এলাকার স্থানীয় সাংবাদিকগনও যেন সত্য প্রকাশে ভীতসন্ত্রস্ত। জনশ্রুতি আছে উপজেলা প্রশাসন সহ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকদের ম্যানেজ করছেন ইটভাটার মালিক রাকিবুল। রাকিবুল সাহেবের নেতৃত্বে মাসিক চুক্তিতে ম্যানেজ করেই চলছে এই অপকর্মের মহোৎসব। এলাকাবাসীর প্রশ্ন প্রশাসন নিরব কেন? তাদের দাবি অচিরেই জনস্বার্থে সঠিক আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এইসকল ইট ভাটা বন্ধ করা হোক।
