মুক্তাগাছায় ডলার প্রতারণার ফাঁদ

ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার:–কুড়িয়ে পাওয়া ডলারের ব্যাগ পাওয়ার কথা বলে বা অন্য কোন লোভনীয় প্রলোভন দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিত্তশালী বা ব্যবসায়ীকে ডেকে এনে সর্বস্ব লুট, মারপিট করে আহত করে বা হত্যার হুমকি দিয়ে বিতারিত করা হয় এলাকা থেকে। এ জঘন্য কাজটি দীর্ঘদিন যাবত চলে আসছে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও জামালপুর জেলার সীমান্তবর্তী মুক্তাগাছা, মধুপুর ও জামালপুর সদর এ তিন উপজেলার সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত পাহাড়ী অঞ্চলে। প্রশাসনের লোকজন জেনেও এর ক‚লকিনারা করতে পারছেন না। কারণ যারা ভুক্তভোগী তারা সর্বস্ব খুইয়ে এখান থেকে জীবন নিয়ে পালিয়ে যায়। তারা অবৈধভাবে ডলার কিনতে এসেছিল। পুলিশের ঝামেলা এড়াতেই নিকটস্থ থানায় অভিযোগ না করে দ্রæত এলাকা থেকে সটকে পড়ে।
সূত্রমতে, মুক্তাগাছা উপজেলার শেষ প্রান্ত ঘেষা পাহাড়ি এলাকার কাটাজানি, চাঁনপুর, বিজয়পুর, রামাকানা, ছালড়া, বন্দবুরুজ, বিন্নাকুড়িসহ তিন উপজেলার সীমান্তঘেষা গ্রামগুলোতে এঅপকর্ম করে আসছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। চক্রটিকে স্থানীয় ভাবে আর্থিক সহায়তা দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সোর্স পাঠিয়ে তাদেরকে দিয়ে চাকুরিজীবি, বিত্তশালী ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে তাদের কাছে পাঠিয়ে এক/দুই ডলারের নোট দেখিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অতিলোভী লোকেরা তাদেরকে বিশ^াস করে তাদের কথামত নগদ টাকা নিয়ে এখানে ডলার কিনতে আসে। ডলার প্রতারকরা পরিকল্পিতভাবে তাদেরকে নিজেদের এলাকায় এনে পিটিয়ে ও হত্যার হুমকি দিয়ে তাদের কাছ থেকে সর্বস্ব লুটকরে রেখে এলাকা থেকে বিতারিত করে। ইতিপূর্বে ডলার প্রতারকদের হাতে মৃত্যর ঘটনাও ঘটেছে। ইতিপূর্বে একাধিক মামলাও হয়। প্রায় ১৫ বছর যাবত এমন ঘটনা উপজেলার এ গ্রামগুলোতে। পুলিশ কোন বাদী না পেয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছে না। মাঝে মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে হানা দিলেও চক্রটি সটকে গিয়ে পাশ^বর্তী উপজেলায় গিয়ে নিরাপদে অবস্থান করে।
গত ১১ মে মুক্তাগাছার ছালড়া রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে অজ্ঞাত এক ব্যবসায়ীকে এনে তার কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে বলে ছালড়া ও জামগড়া এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী এ তথ্য জানিয়েছে। তারা জানান, জামগড়া এলাকার ছমেদ আলীর পুত্র তোতা মিয়া, দুদু মিয়া ও একই গ্রামে নাজিম উদ্দিনের পুত্র মন্ডলের নেতৃত্বে ৬/৭ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল এ কাজ করেছে। এলাকাবাসী তাদের ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক তদন্তকরে এ জঘন্য অপরাধী চক্রের মূলহুতাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। অন্যথায় অপরাধীদের দৌরাত্ম দিন দিন আরও বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটবে।