মুক্তাগাছায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনে অনিয়ম

রুপান্তর বাংলা মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: মুক্তাগাছা উপজেলার বনবাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন করার ১০ পার হলেও প্রধান শিক্ষক অনুমোদনের জন্য জমা দেননি উপজেলা শিক্ষা অফিসে। এ নিয়ে এলাকায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
জানাযায়, বনবাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কিিমটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ২৪ নভেম্বর ২০২২ তারিখ শিক্ষার্থী অভিভাবকদের সাধারণ সভার মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে মোফাজ্জল হোসেনকে সভাপতির প্রস্তাব করে পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের ২১ দিনের মধ্যে তা অনুমোদনের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও অত্র বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শরিফা খাতুন ১০ মাস অতিবাহিত হলেও কমিটির তালিকা জমা দেননি।
এদিকে প্রস্তাবিত কমিটির লোকজন দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ম্যানেজিং কমিটির কোন মিটিং না হওয়ায় তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন উপজেলা শিক্ষা অফিসে কমিটির কোন তালিকা জমা দেয়নি প্রধান শিক্ষক। পরে কমিটির লোকজন উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর কমিটির বিষয়ে জানতে চেয়ে এবং কমিটি অনুমোদনের জন্য জমা না দেয়ার কারণ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন জানান।

এদিকে অভিযোগের খবর পেয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা গত ১৪ আগস্ট পুনরায় কমিটি গঠন করার জন্য
১৬ আগস্ট বিদ্যালয়ে অভিভাবকদের উপস্থিত থাকার জন্য চিঠিদেন। চিঠিতে ইস্যুর তারিখ ও সময় উল্লেখ না থাকায় বিভ্রান্তিতে পরেন অনেক অভিভাবক। ১৬ আগস্ট অভিভাবকরা হাজির হয়ে পূর্বের কমিটি অনুমোদন না হাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষা অফিসার কোন জবাব দিতে পারেননি। পরে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভার কাজ সমাপ্ত করা হয়।
সরেজমিনে জানাযায়, বনবাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ৭জন শিক্ষকের মধ্যে সবাই স্থানীয় বাসিন্দা। তার মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শরিফা খাতুন, সহকারি শিক্ষিকা মারুফা আকন্দ সহোদর বোন ও সহকারি শিক্ষক আব্দুলাহ মারুফ ও নূরুদ্দিন মাসুদ সহোদর ভাই এবং বাকী ৩জনই তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। মূলত ৭জন শিক্ষকই একেঅপরের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির প্রস্তাবিত সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন প্রধান শিক্ষিকা শরিফা খাতুনের ভগ্নিপতি ও ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা শরিফার ছোট বোন মারুফা আকন্দের স্বামী। মূলত তাদের পারিবারিক কলহের জের প্রতিষ্ঠানে প্রয়োগ করে বিদ্যালয়ের ক্ষতি করেছেন। যার প্রভাব শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষদের সাথে কথা বলে জানাযায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষক বিদ্যালয়ে প্রভাব খাটিয়ে যা ইচ্ছা তাই করছেন।
অত্র বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শরিফা খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত ২৪ নভেম্বর ২২ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য সভা ডাকা হয়েছিল। মোফাজ্জল হোসেনের নাম সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব করা হলেও পরবর্তীতে মতভেদ দেখা দেয়ায় কমিটি হয়নি। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নির্দেশে পূর্বের কমিটি দিয়েই কার্যক্রম চলছে।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।