ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার: স্বামী ও সতীনের প্রতারণা ও নির্যাতনের স্বীকার হয়ে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে এক গৃহবধু। প্রতারক ও নির্যাতনকারী স্বামী ও তার লোকজন প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে গৃহবধু তানজিলা আক্তার (৩৬) তার জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
ঘটনার বিবরণে জানাযায়, ময়মনসিংহ সদর থানার নিমতলী গ্রামের মুনতাজ আলী সরকারের কন্যা মোছাঃ তানজিলা আক্তার গতকাল শুক্রবার মুক্তাগাছা প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের সাথে তার উপর স্বামী ও সতীনের অমানষিক নির্যাতন, প্রতারনা ও আত্মসাতের ঘটনা বর্ণনা দেন। তিনি জানান, তার বিয়ে হয় জামালপুর সদর উপজেলার দাপুনিয়া গ্রামে। সেই সংসারে তিন কন্যা সন্তান রয়েছে। তার পূর্বের স্বামী মোক্তার হোসেন ৯ বছর পূর্বে অন্য এক মেয়েকে নিয়ে গিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে। তিন কন্যাসহ তাকে রেখে চলে যায় স্বামী মোক্তার হোসেন। গৃহবধু তানজিলা আক্তার বাধ্য হয়েই তিন কন্যা নিয়ে ঢাকায় চলে যান এবং সে গার্মেন্টএ চাকুরী করে তিন কন্যাকে লালন পালন করতে থাকেন। চার বছর পূর্বে তার পিত্রালয়ে এসে বসবাস শুরু করলে পাশ্ববর্তী মুক্তাগাছা থানার খামারের বাজার এলাকায় পূর্বের স্বামী মোক্তার নতুন স্ত্রী নিয়ে ব্যবসা খুলে এলাকায় বসবাস শুরু করেন। ব্যবসার পাশাপাশি নানান অপকর্মে জড়িয়ে পরে। এরই প্রতিকারর্থে বর্তমান স্বামী সোহাগের সাথে পরিচয় হয় তানজিলা আক্তারের। পরবর্তীতে সোহাগের প্রথম স্ত্রী কুলছুম আক্তারের ঘটকালিতে এবং সে মেনে নিয়ে সোহাগের সাথে কাবিন ছাড়াই বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পর সোহাগ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে। সে সময় টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে তানজিলা আক্তার তার পিত্রালয় থেকে জমি বিক্রি করে ৭ লক্ষ টাকা সোহাগকে দেয়। শর্ত থাকে নির্বাচনের পরে এ টাকা ফেরত দিবে। নির্বাচনে পাশ করার পর সোহাগ আস্তে আস্তে তার থেকে দূরে সরতে থাকে এবং সাংসারিক খরচ দিতে গরিমসি চালায়। গত ২১/০৭/২০২৩ ইং তারিখ তানজিলা আক্তার তার মুক্তাগাছা ভাড়া বাসার খরচ চাইতে খামারের বাজার গেলে বাজারেই তাকে ব্যাপক মারধর করে একটি ঘরে আটকিয়ে রাখে। পরে রাত ১১ টায় কলাকান্দা নিজ বাড়িতে নিয়ে তার প্রথম স্ত্রী কুলছুমকে সাথে নিয়ে রাতভর নির্যাতন করে। ভোর রাত ৪ টায় জীবন বাঁচাতে সেখান থেকে পালিয়ে রঘুনাথপুর সাহাপাড়া এক হিন্দু বাড়িতে আশ্রয় নেয়। টের পেয়ে সোহাগ ও তার লোকজন সেখান থেকে পুনরায় তানজিলাকে ধরে নিয়ে স্থানীয় খোকা নেতার বাড়িতে আটক রেখে কাজী এনে খোলাসা তালাক কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। পরে সেখান থেকে এসে মুক্তাগাছা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। চিকিৎসা শেষে মুক্তাগাছা থানায় এসে মামলা করেন। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেন। যাহা চলমান।
এদিকে সোহাগ উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে নি¤œ আদালত থেকে জামিন নেয়। বর্তমানে মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য সোহাগ ও তার লোকজন বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ সহ হুমকি ধামকি অব্যহত রেখেছে। যে কোন সময় তার বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।