ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহ বন বিভাগের রসুলপুর রেঞ্জের আওতায় চন্ডিমন্ডপ ফরেস্ট ভিটের অধিনে রামাকানা মৌজায় ২০০৫/২০০৬ সনে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে সৃজিত ৩৫ হেক্টর বন বিভাগের জমিতে বনায়ন করা হয়। উপকার ভোগী ৩৫ জন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই একই এলাকার বাসিন্দা।
বনায়ন করার পর তারা সামাজিক বনায়নের উপর গুরুত্ব না দিয়ে নিজেরা সরকারি বনভূমিতে সৃজিত সামাজিক বনায়ন ধ্বংস করে চাষাবাদ শুরু করেন। চাষাবাদ শুরু করে অনেকে বনজ গাছ কেটে আম বাগান/ আখ চাষসহ অন্যান্য ফসল করে। আস্তে আস্তে সামাজিক বনায়ন ধ্বংস করে ফেলে। ২০০৫/২০০৬ সালে সৃজিত বাগান ২০১৭ সালে কর্তন করার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট বন বিভাগ যথাসময়ে গাছ নিলামে বিক্রি না করায় সরকার বড় অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। বন খেকুরা প্রতিনিয়ত বনের গাছ কেটে পাচার/বিক্রি করছে। সেই সাথে গাছ শূণ্য জমিতে চাষাবাদ করে যাচ্ছে এবং বন বিভাগের জমি জবর দখল করে নিচ্ছে। এতে বন বিভাগের জমি প্রতিনিয়ত বেহাত ঘটছে।
সূত্রমতে, যারা স্থানীয় বাসিন্দা এবং উপকারভোগী তারাই এর দখলের মূল হোতা। তারা নিজেরাই দখলকৃত জমিতে চাষাবাদ করে এবং অন্য উপকারভোগীদের জমিতে অবশিষ্ট বৃক্ষসমেত জমি নিজেদের প্লট বলে দাবী করছে। এলাকার বাহিরের উপকারভোগীদের স্বত্ব না দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
উপকারভোগী সমিতির সভাপতি মোঃ গোলাপ মিয়া জানান, আমাদের ভাইদের এবং আমার নামে উপকারভোগী হিসেবে যে জমি আছে তা আমরা রক্ষা করেছি। সেইগুলো নিলামের প্রক্রিয়া চলছে। বাকি জমি বেহাত করে চাষাবাদ চলছে। তিনি জানান, উপকারভোগীদের জমিতে পুকুর খনন করছে আব্দুল জলিল নামের এক ব্যক্তি।
তাছাড়া আব্দুছ ছালাম বন ভূমির জমিতে বেগুন চাষ করছে। হান্নান মেম্বার নামে এক ব্যক্তি জমি অন্যের কাছে বিক্রি করেছে। এ ব্যাপারে ভিট কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি।
এ ব্যাপারে চন্ডিমন্ডপ ভিট কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল বারীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, ২০০৫/২০০৬ সালে সৃজিত রামাকানা মৌজার বাগানটি ২০১৭ সালে কর্তন করার কথা থাকলেও পূর্ববর্তী কর্মকর্তারা যথাসময়ে প্রক্রিয়া শুরু করেনি। আমি আসার পর গাছ নিলামের ব্যবস্থা করছি। ৩৫ হেক্টর বাগানের মধ্যে বর্তমানে ১২ হেক্টরের মতো বাগান রয়েছে।
বাকি বাগান ধ্বংস হয়েগেছে এবং জবরদখল হয়েগেছে। যারা এখানে স্থায়ী তারাই বন ধ্বংস করে জমি দখল করেছে অন্য উপকারভোগীদের জমিতে কিছু গাছ রয়েছে সেগুলি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বঞ্চিত উপকারভোগীদের দাবী যারা সৃজিত বাগান ধ্বংস করে চাষাবাদ করছে এবং জমি জবর দখল করে রেখেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এবং তারা যেন বিক্রিত গাছের লভ্যাংশ না পায়। যারা প্রকৃতপক্ষে জবর দখল করেনাই তারাই যেন বিক্রিত গাছের উপকারভোগীর অংশ পায়।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে নিরীহ উপকারভোগীরা।