ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে জোসনা বড়ুয়া মুক্তাগাছায় টিপু সুলতান হত্যা মামলায় আদালতে নারাজি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: মুক্তাগাছায় টিপু সুলতান হত্যা মামলায় রেলওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন দেওয়ায় মামলার বাদী নিহত টিপু সুলতানের মা জোসনারা বড়ুয়া বিজ্ঞ আদালতে নারাজি দেন। নারাজিতে উল্লেখ করেন রেলওয়ে টাইম কিপার আনোয়ার হোসেন জামালপুর রেলওয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেন। এজাহারে প্রকৃত ঘটনা উল্লেখ না করে বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করেন। ইহা ছাড়া ব্যক্তির পরিচয় যাচাই না করে ভিকটিমকে মানসিক ভারসম্যহীন বলে উল্লেখ করে। তাছাড়া এজাহারে ভিকটিমের আত্মীয় স্বজনদের এবং ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শী কাউকে জিজ্ঞাসা করেন নাই। আসামীর পক্ষাশ্রিত হয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যাভাবে এজাহার দায়ের করে। এজাহারে ট্রেনে কাটা পরে মৃত্যুবরণ করে। কিন্তু পোষ্ট মর্টেম রিপোর্ট মৃতের শরীরে কোন কাটার চিহ্ন নাই বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। উক্ত এজাহারটি দায়সারা ও মনগড়াভাবে আসামীদের রক্ষা করার জন্য করা হয়েছে। এ ব্যাপারে, নারাজি দরখাস্তকারীনি পুলিশ সুপার, ঢাকা, বাংলাদেশ রেলওয়ে পুলিশ বরাবর সঠিক তদন্তের জন্য আবেদন করেন। উল্লেখ্য, এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন রূপান্তর বাংলা, নিউজ বিবিসি বাংলা, দৈনিক আজকের ময়মনসিংহ, দৈনিক মানবজমিন সহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সূত্রমতে, মুক্তাগাছা শহরের কাউনডাঙ্গার চর এলাকার মৃত অথিন্দ্র লাল বড়–য়ার (অব: এসআই) একমাত্র পুত্র টিপু সুলতান (৪০) এলাকার কিছু মাদকসেবীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। টিপুর কাছে টাকার জন্য মাদকসেবীরা চাপ প্রয়োগ করত টাকা না পেলে তাকে মারধর করতো। গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে মাকসেবীরা টিপুর কাছ থেকে টাকা না পেয়ে তাকে মারধর করে। সে সময় তার মা জোসনা বড়ুয়া ছেলেকে মারধর করায় এলাকার কিছু মাদকসেবী নাম উল্লেখ করে মুক্তাগাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর থেকে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রাখে। গত ১২ আগস্ট শনিবার রাত ১০ টায় বাসা থেকে বের হয়ে আটানি বাজার চা খেতে এসে আর বাড়ি ফিরেনি। পরিবারের লোকজন রাতে খোঁজাখোজি করে পায়নি। পরদিন সকালে ময়মনসিংহ খাগডহর এলাকায় রেল লাইনের পাশে টিপুর মরদেহ পায় পুলিশ। জামালপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। জামালপুর থানায় ইউডি মামলা নং ২৬/২০২৩, তারিখ ১৩/০৮/২০২৩ইং। মামলার বাদি ময়মনসিংহ-কেওয়াটখালী বাংলাদেশ রেলওয়ের টাইমকিপার আনোয়ার হোসেন।

টিপুর মা জানান, ময়না তদন্তের রিপোর্টে ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি জানান। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে সে বাদী হয়ে ময়মনসিংহ বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৮ জনকে আসামী করে মামলা করলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি কোতোয়ালী থানায় প্রেরণ করেন। কোতোয়ালী থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। সে ন্যায় বিচার পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অদ্যবধি আমাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাননি বা মুক্তাগাছাতেও ঘটনার সূত্রপাতের স্থল পরিদর্শন করেননি। অথচ আমাদের না জানিয়ে বা জিজ্ঞাসা না করে পুলিশ মনগড়া ভাবে আসামীদের পক্ষ অবলম্বন করে মনগড়া ভাবে রিপোর্ট দেন। যার জন্য পুলিশের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়েছি।

তিনি জানান, আমার বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। ১৯৭৭ সালে বিয়ে হওয়ার পর স্বামীর চাকরীর সুবাদে মুক্তাগাছায় বসবাস শুরু করি। এখানে আমার আত্মীয় স্বজন কেউ নেই। স্বামী মারা যাওয়ার পর একমাত্র পুত্রকে নিয়েই এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছি। সমাজের সবাই মুখে আমাকে সান্তনা বা সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে ছেলে হত্যার বিচারের বিষয়ে কেউ আমাকে সহযোগিতা করছে না। আমি অসহায় ভাবে কালাতিপাত করছি। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার পাব কিনা জানিনা। তিনি এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সেই সাথে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।