ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় মসজিদের ইমামকে অব্যহতি ও কমিটির ফান্ড নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুপক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বাদ জুম্মা উপজেলার জয়রামপুর জামে মসজিদ মাঠে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষই মুক্তাগাছা থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগে জানাযায়, মুক্তাগাছা বড়গ্রাম ইউনিয়নের জয়রামপুর জামে মসজিদ কমিটি নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধ চলে আসছিল। গত শুক্রবার মসজিদের টাকা-পয়সার হিসাব ও আলোচনার পর এক পক্ষ মসজিদের ইমামকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বললে অন্য পক্ষ কোন কারণ ছাড়াই অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিরোধীতা করেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে উভয় পক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। আহতরা হলেন, রাসেল (৩২), মো. সোহেল (৩২), হোরাইরা (১০), বকুল (৩৪), দুলাল মিয়া (৪৫), আঃ হাকিম (৫৫), আঃ হালিম (৫২), মোরাদ মিয়া (২৪), বিলাল উদ্দিন (৬২), মনির হোসেন (২৫)।
সূত্রমতে, জয়রামপুর জামে মসজিদের সাবেক সভাপতি হাফেজ আলী অভিযোগ করেন বিবাদী আব্দুল হাকিম গং দের সাথে মসজিদ ফান্ডের টাকা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শুক্রবার বাদ জুম্মা মুসল্লিদের উপস্থিতিতে ফান্ডের টাকা পয়সার হিসাব হয়। এক পর্যায়ে আব্দুল হাকিম গংরা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং এক পর্যায়ে তাদের উপর হামলা চালিয়ে তার লোকজনদের আহত করে।
অন্যদিকে প্রতিপক্ষ আব্দুল হাকিম গং দের দাবী প্রতিপক্ষ হাফেজ আলী মসজিদের ৪৯ শতাংশ জমি ক্রয় করে বায়নাপত্র ও জমি রেজিষ্ট্রীর টাকা তার কাছে গচ্ছিত রাখা হয়। তার কাছে গচ্ছিত বায়নাপত্র টাকা চাইলে সে তালবাহান করতে থাকে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাফেজ আলীর লোকজন আমাদের লোকজনের উপর হামলা করে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোঃ রাসেল জানান, জুম্মার নামাজের পর এক পর্যায়ে আমি বলি তোমরাই ক্যাশিয়ার বানাইছ ক্যাশিয়ারের কাছে কেন টাকা পয়সা জমা কর না। এক বছর আগে খলা থেকে প্রজেক্টের টাকা তুলছ সবাই কষ্ট করে গিয়ে টাকা তুলছে এখন পর্যন্ত ঐ হিসাবটাও দিছনা। আস্তে আস্তে মানুষের মসজিদ উন্নত হয় আর আমাদের মসজিদ দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে বললেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদের ভিতরেই মারামারি শুরু করতে চায় তখন মুসল্লিরা বাঁধা দেয়। পরে বেড়িয়ে যাওয়ার সময় ১০/১২ জন দলবেধে আমার উপর আক্রমণ করে মারতে থাকে। আমি দেখতে পাই আমার মাথা ও নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। পরে উপস্থিত লোকজন আমাকে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে মসজিদের ইমাম মাওলানা হাবিবুর রহমান জানান, মসজিদের টাকা পয়সা হিসাব নিকাশ হয়। এক পর্যায়ে আমাকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করলে আব্দুল হাকিম সহ উপস্থিত মুসল্লিরা বিনা কারনে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে প্রতিবাদ করে এতেই উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের রূপ নেয়। এতে উভয় পক্ষের আহতের ঘটনা ঘটে। পরে উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে মুক্তাগাছার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফারুক আহমেদ বলেন, জয়রামপুর জামে মসজিদের কমিটি ও ফান্ড নিয়ে মারামারি হয়েছে। এতে উভয়পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।