ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার: ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় বন্ধুবেশে প্রতারণা করে জমি রেজিষ্ট্রী করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ বিজ্ঞ আদালতে মামলা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, মুক্তাগাছা উপজেলার গোবিন্দ মোদক এর পুত্র কার্তিক পিতার অবাধ্য হওয়ায় তার পিতাসহ পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে বিতারিত করে। আশ্রয় নেয় পরশী নারু গোপাল ধামের বাড়িতে। সে বাড়িতেই থেকে বাড়ির সবার মন যুগিয়ে থাকতে থাকে। পাঁচ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর তার পিতা কার্তিক ও পরিবারের অন্যান্য লোকজনের সাথে বিরোধ মিটে যায়। অবশেষে পিত্রালয়ে ফিরে যায় কার্তিক। পরশী নারু গোপাল ধামের একমাত্র পুত্র বিশ^বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র নিকুঞ্জ ধামের সাথে আশ্রয়ের সুবাধে বিশ^স্ততা অর্জন করে। কোন কিছু হলেই কার্তিকের পরামর্শ নিয়ে কাজ করে নিপুঞ্জ। এক সময় নিপুঞ্জ ধাম নেশার জগতে পা বাড়ায়। আর সব কিছুর সর্বনাশের যোগান দেয় কার্তিক। নেশার গোড়ে যখন যা চায় তাই নিয়ে হাজির করে নিপুঞ্জের কাছে। এভাবে ঋণ করতে করতে প্রায় চার কোটি টাকা ঋণ হয়ে যায় নিপুঞ্জের। সে টাকা জমি বিক্রি করে পরিশোধ করে। গত ২ ফেব্রæয়ারী, ২০২৩ তারিখে ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য আট জনের কাছে জমি বিক্রির দলিল করে নিপুঞ্জ। জমি রেজিষ্ট্রী হয় আট জনের নামে কিন্তু কার্তিক অতি চতুরতা ও প্রতারণা করে সকল দলিলের মাঝে তার নিজ নামে ছয় শতাংশ জমি নিপুঞ্জের অজ্ঞাতে দানপত্র দলিল করিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ক্রেতারা যার যার রেজিষ্ট্রী দলিল মূলে জমি বুঝে নেয়। সম্প্রতি কার্তিক মোদক তার প্রতারণা করে রেজিষ্ট্রী করে নেয়া জমির দলিল দেখিয়ে জমি দখলে যাওয়ার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয় আট জনের কাছে জমি বিক্রি করে ১৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এ নিয়ে একাধিকবার শালিস ডাকলেও শালিসিগণ কাল ক্ষেপন করে। অবশেষে নিপুঞ্জ ধাম ময়মনসিংহ বিজ্ঞ আদালতে জমির জলিল বাতিল করার জন্য মামলা দায়ের করেন। আদালত থেকে উক্ত জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে গেলে নিপুঞ্জর মা ঊষা রানী দাস বলেন, আমি কার্তিককে আশ্রয় দিয়েছিলাম। পাঁচ বছর আমার বাড়িতে থেকেছে। অথচ সেই কার্তিক আমার ছেলেকে বিপথগামী করে সর্বশান্ত করেছে এবং প্রতারণা করে জমি লিখে নিয়েছে। জমি বিক্রির ১৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে। গত কয়েকদিন যাবত জমিতে জোড় পূর্বক ঘর উত্তোলন করবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ও ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার হেকমত আলী মেম্বার কার্তিকের পক্ষ অবলম্বন করে, গত বুধবার বিকেলে নিপুঞ্জ ধামের বাড়িতে এসে তার স্ত্রী মনি দাস ও তার বৃদ্ধা মাকে হুমকি দিয়ে যায় তারা রাতের বেলায় জোর পূর্বক ঘর উঠাবে হেকমত মেম্বার হুমকি দিয়েছে বলে নিপুঞ্জের স্ত্রী মনি দাস জানান।
অন্যদিকে, রাস্তার পাশে ঘরের চাল ও খুটি তৈরী করে রেখেছে কার্তিকের ভাড়াটিয়া লোকজনেরা। রাতের বেলায় যে কোন সময় ঘর উঠাতে পারে বলে নিপুঞ্জ ধামের মা ও স্ত্রী মনি দাস জানান। এ নিয়ে যে কোন সময় বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে এলাকাবাসী সন্দেহ পোষন করছেন।
এ ব্যাপারে ৭নং ঘোগা ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ আহমেদ এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রতিপক্ষ কার্তিক ও হাসমত মেম্বারকে এ জমিতে ঘর উঠাতে নিষেধ করা হয়েছে। যেহেতু আদালতে মামলা আছে আদালতে রায় হওয়ার পর যার পক্ষে রায় হবে সেই জমি তার হবে। এ বিষয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।