রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি :–মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর ২০২৪)সকালে পৌরসভার প্রধান ফটকের সামনে সৌন্দর্য বর্ধনের নামে রাঙামাটি পৌরসভা কার্যালয়ের খোলা মাঠ বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ এবং জায়গাটি উন্মুক্ত রাখার দাবিতে রাঙামাটিতে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে সচেতন পৌরবাসী।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম শাকিল, পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. রবিউল আলম, জেলা জাসাসের আহ্বায়ক মো. কামাল উদ্দিন, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. ওমর ফারুক, গ্রীন কমিউনিটির সভাপতি আব্দুল আল মামুন। এতে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বক্তারা বলেন, পৌরসভার এই খোলাস্থানটিতে শহরের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হয়ে থাকে। একই সাথে বিকেলে এই এলাকাসহ আশেপাশের শিশুরা এই মাঠে খেলাধুলা করে থাকে। পৌরসভার প্রশাসক জনগুরুত্বপূর্ণ কাজ বাদ দিয়ে জনবিরোধী কাজে লিপ্ত হয়েছেন।
উপরোক্ত মানববন্ধন এর বিষয় নিয়ে রাঙ্গামাটি পৌরসভার প্রশাসক হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- মানবন্ধন এর মাধ্যমে যে সকল দাবী দাওয়া করা হয়েছে তা পৌরসভার চলমান কার্যক্রম। আমি দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র আড়াইমাস। এই আড়াইমাসে আমরা রাঙ্গামাটি পৌরসভাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছি। আমাদের যে উদ্যোগগুলো রয়েছে সেগুলো হচ্ছে :
১. পৌরসভার যে স্থানে সড়ক বাতি নেই সেই সকল স্থানে বাতি স্থাপন করা, ২. নিয়মিত ৩ বেলা ময়লা পরিস্কার করা, ৩. সপ্তাহে ১ দিন ফুটপাত দখলমুক্ত করার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা, ৪. নিয়মিত পৌর এলাকার সকল ব্যানার, পোস্টার অপসারণ, ৫. মানিকছড়ির পৌরসভার গেইট এর কাজ সমাপ্ত করা, ৬. পৌরসভার মালিকানাধীন সকল স্থাপনা অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার, ৭. অফিসের সামনের মাঠটি পুরাতন অকেজো গাড়ি সরিয়ে খালি করা এবং মাঠটির চারপাশে শীতকালীন ফুলগাছ লাগানো এবং মাঝখানের অংশে ব্যাডমিন্টন কোর্ট করা। মাঠের সাইডের গর্ত ভরাট করে সেখানে বাচ্ছাদের জন্য কিছু রাইড স্থাপন করা, ৮. পুরো পৌর এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং দৃষ্টিনন্দন লাইটিং করা, ৯. শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বড় ডাস্টবিন স্থাপন করা, ১০. রাঙ্গামাটি শহরের প্রবেশপথে রেডিও ষ্টেশন এলাকায় ডাম্পিং এরিয়ায় গ্রীণ ফেন্সিং এর মাধ্যমে সুন্দর একটি ডাম্পিং এরিয়া নির্মাণ করা যাতে এই ময়লা আবর্জনা ডাম্পিংয়ের বাইরে গিয়ে পরিবেশ দুষন করতে না পারে. ১১. বধির এবং অন্ধদের জন্য স্কুল ভবন নির্মাণ, ১২. রাংগামাটির সকল স্কুল পড়ুয়া বাচ্ছাদের সাতার শেখানোর জন্য সুইমিং পুল বানানো।, ১২. টুরিস্টদের সুবিধার্থে ইনফরমেশন সেন্টার, লকার এবং মহিলাদের জন্য আলাদা ওয়াশব্লক নির্মাণ, ১৪. যেসকল এলাকায় বিদ্যুৎ এর সংযোগ নেই সেসব এরিয়ায় সোলার লাইট স্থাপন, যেমন উলুছড়ি, বিলাইছড়ি পাড়া এবং লেকের অপরপাড়ের অংশ (কাজ চলমান), ১৫. বনরুপা বাজারের রাস্তা মেরামত করা প্রতি বাজার বারে এখানে প্রচুর লোক সমাগম হয় তাদের সুবিধার্থে সমতা ঘাটের আশেপাশে ওয়াশব্লক নির্মাণ।, ১৬. আধুনিক কসাইখানা নির্মাণ করা। এর মধ্যে অনেক কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে।
তিনি আরো বলেন- রাঙ্গামাটি পৌরসভাকে একটি আধুনিক, সুন্দর দৃষ্টি নন্দন পৌরসভা হিসাবে নির্মাণ করা পৌরসভার কার্যসহায়ক কমিটির উদ্দেশ্য। আমিতো সারাজীবন রাঙ্গামাটি থাকবো না। আমি রাজনীতি করিনা। শুধুমাত্র পৌরবাসীর কথা চিন্তা করে আমরা এইসব উদ্দ্যোগ গ্রহণ করি।
তিনি আরো বলেন- রাঙ্গামাটি পৌরসভার সামনের প্রাঙ্গনটিতে পূর্বে পৌরসভার অকেজো গাড়ী সমূহ রাখা ছিল এবং একপাশে কিছু দখলদার কর্তৃক অবৈধভাবে দোকানঘর নির্মান পূর্বক দখল করা ছিল। পৌরসভার মাসিক সভার সিদ্ধান্তমতে পৌর প্রাঙ্গণের অকেজো গাড়িসমূহ অপসারণ করা হয়েছে এবং মাঠের দুইপাশে শীকালীন ফুলের চারা রোপনের জন্য ফুলের বেড তৈরির কার্যক্রম চলছে। মাঠের মাঝখানের পুরো অংশই খোলা। উন্মুক্ত রাখা হবে এবং ব্যাডমিন্টন কোর্ট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এসব কার্যক্রম শেষ হলে পৌরসভার মাঠটিতে পূর্বে যেসকল অনুস্ঠান হতো সেগুলোর আয়োজনে কোন বাঁধা থাকবেনা। মানববন্ধনটি মূলত উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে বললেও আসল রাণ ভিন্ন। পৌর মার্কেট/অবৈধ দখলদারদের নোটিশ প্রদানসহ প্রকল্প বাস্তবায়নে যাদেরকে সুবিধা দেওয়া হয়নি তারাই মানববন্ধন করেছে।