সংবাদ শিরোনাম

লোহাগাড়ায় জাহেদ হত্যাকাণ্ড: আদালতে দুই আসামির চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি।

এম এ রাশেদ চৌধুরীঃ—চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মোঃ জাহেদ (১৯) হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি আদালতে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তাদের দেয়া জবানবন্দি থেকে উঠে এসেছে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ।

লোহাগাড়া থানার মামলা নং-১৫, তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড অনুযায়ী এ মামলা দায়ের করা হয়। বাদী হিসেবে মামলা করেছেন নিহত জাহেদের বড় ভাই মোঃ শাকিল হাসান (২৪), পিতা কোরবান আলী, সাং উত্তর কলাউজান, রসুলাবাদ পাড়া।

১৩ জানুয়ারি ২০২৫, রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় অভিযুক্ত মোঃ ইকবাল হোসেন ওরফে ইমন (২২) নিহত জাহেদকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যদের ধারণা ছিল, ইমন তার দীর্ঘদিনের বন্ধু হওয়ায় কোনো সমস্যার সৃষ্টি হবে না। কিন্তু রাত গভীর হয়ে গেলেও জাহেদ বাড়ি ফিরে না আসায় পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।

পরে, জাহেদকে খুঁজতে পরিবারের লোকজন বেরিয়ে পড়েন। ১৪ জানুয়ারি সকালে লোহাগাড়ার কলাউজান ইউনিয়নের রাবার ড্যাম বাজার সংলগ্ন কালী মন্দিরের পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বড়ই গাছের নিচে পড়ে থাকা মরদেহ দেখে পরিবারের সদস্যরা শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন।

ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে আটক করে। তারা হলেন মোঃ ইকবাল হোসেন ওরফে ইমন (২২), পিতা মোঃ ইউনুছ। আনিছুর রহমান আসিফ (২১), পিতা মোঃ নুরুল আমিন।

গ্রেফতারকৃত ইমনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিহত জাহেদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়, যা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

১৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে দুই আসামি চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা স্বীকার করেন যে, পরিকল্পিতভাবে জাহেদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। চাঞ্চল্যকর এই স্বীকারোক্তি স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে গভীর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

নিহত জাহেদের ভাই ও মামলার বাদী মোঃ শাকিল হাসান বলেন, “আমার ভাই কারও সঙ্গে শত্রুতা করে চলত না। এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড আমাদের পুরো পরিবারকে ভেঙে দিয়েছে। আমরা সঠিক বিচার চাই।”

লোহাগাড়া থানার ওসি বলেন, “তদন্তে প্রতিটি দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

জাহেদের অকালমৃত্যুতে পুরো এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্নের দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*