মুক্তাগাছায় পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে সেচ লাইসেন্স প্রদানের অভিযোগ

ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার;
ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেডের অধীনে ২৭৪টি গভীর নলকূপ রয়েছে, যা উপজেলা সেচ কমিটির মাধ্যমে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়ে বোরো মৌসুমে সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবে চলতি মৌসুমে লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিভিন্ন অজুহাতে নলকূপ ম্যানেজারদের কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে লাইসেন্স প্রদান করছেন। টাকা না দিলে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১০ জন সমবায় ম্যানেজার বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বিনা ঘুষে কোনো লাইসেন্স নবায়ন করছেন না। ৭ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে তিনি সেচ কমিটিতে সুপারিশ করেন। টাকা না দিলে নানা অজুহাতে লাইসেন্স প্রদান বিলম্বিত করেন এবং সমবায় সমিতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে নিজের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করেন।

বাহেঙ্গা উত্তর কৃষি সমবায় সমিতি লিমিটেডসহ একাধিক সমিতির ম্যানেজাররা অভিযোগ করেছেন, চলতি মৌসুমে ৫০-৬০টি সেচ লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ফি ছাড়াও কয়েক লাখ টাকা ঘুষ আদায় করা হয়েছে।

গয়েশপুর পশ্চিম কৃষি সমবায় সমিতির ম্যানেজার ফজলুল হক বলেন,
“লাইসেন্স নবায়নের জন্য আমাদের নিয়মিত ফি জমা দেওয়ার পরও নানা অজুহাতে টাকা দাবি করা হয়েছে। টাকা না দিলে ফাইল আটকে রাখা হয়।”

বিআরডিবির অফিসের হিসাব সহকারী মোহাম্মদ ফজলুল হক এ বিষয়ে স্বীকার করে বলেন,
“আনুষঙ্গিক কাজের জন্য কিছু অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন দাবি করেন,
“লাইসেন্স ফি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিএডিসির মাধ্যমে জমা হয়। এখানে ঘুষ গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

ভুক্তভোগীরা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সরকারি সেবা পেতে ঘুষ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা কৃষকদের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।