রুপান্তর বাংলা ডেক্স–ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা পৌরসভার হাট-বাজার ইজারায় ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে সমঝোতা করার অভিযোগ উঠেছে পৌর প্রশাসন ও বিএনপি দলীয় দায়িত্বশীল কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
কাগজ-কলমে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও কৌশলে সরকারকে বঞ্চিত করা হয়েছে কোটি টাকার রাজস্ব থেকে। এ নিয়ে বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের দাবি, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম শহীদের স্বেচ্ছারিতায় স্বেচ্ছারিতায় এবং হস্তক্ষেপে বিএনপির নেতাকর্মী হয়েও হাট-বাজার ইজারার দরপত্র দাখিল করতে পারছে না অনেকেই। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে সামান্য বেশি দেখিয়ে বিএনপি নেতা শহীদ ও পৌর প্রশাসনের সমঝোতায় সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নেতার পছন্দের লোকজনকে হাট-বাজার ইজারা দিচ্ছেন, যা মুক্তাগাছায় ওপেন সিক্রেট। সামনে নির্বাচন থাকায় দলীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না বলেও নীতিনির্ধারকরা জানান। জানা গেছে, ১৪৩২ সনে উপজেলার পৌরসভার আওতায় গুরুত্বপূর্ণ ৪টি হাট-বাজার ও পৌর বাসটার্মিনাল ইজারার দরপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পৌর প্রশাসন। সে অনুযায়ী ১৭ফেব্রুয়ারি ছিল দরপত্র বিক্রির শেষ দিন। পরদিন ১৮ মার্চ দুপুর পর্যন্ত দরপত্র দাখিল করা হয়। তার আগেই গুরুত্বপূর্ণ ক্রিমহোনী নতুন বাজার, আটানী বাজার, দরিচারী আনী বাজার ও মুক্তাগাছা পৌর বাসটার্মিনাল ইজারা নিয়ে সমঝোতার ফন্দি আঁটে পৌর প্রশাসন ও বিএনপির সমন্বয়ে একটি চক্র। চক্রটি এ হাটগুলোর দরপত্র ক্রয় করতে আসা ব্যক্তিদের বাধা প্রদান করে। নানা বাধা বিপত্তির মুখে ওই হাট-বাজারগুলোর প্রতিটিতে ৭/৮টি দরপত্র বিক্রি হয়। এর মধ্যে শুধুমাত্র ত্রিমহোনী নতুন বাজারের ইজারা শিডিউল বিক্রি হয় ২২টি।
যার মধ্যে ডিসি অফিস থেকে ১০টি, এসিল্যান্ড অফিস থেকে ১টি এবং পৌরসভা থেকে ১১টি শিডিউল বিক্রি হয়। অথচ প্রত্যকটি বাজারের শিডিউল জমা পড়েছে দুই থেকে তিনটি করে। অধিকাংশ ক্রেতাই চক্রের তোপের মুখে দরপত্র জমা দিতে পারেননি। তাদের মধ্যে একজন ময়মনসিংহ সদরের বাসিন্দা তাওসিফ ইবনে মান্নান। তিনি পৌরসভার ত্রিমহোনী নতুন বাজারের ইজারা পেতে প্রথম পর্যায়ের বাজার ইজারার শিডিউল ক্রয় করেন এবং ব্যাংক এশিয়া থেকে ১ কোটি ৭১ লাখ ৭৮ হাজার ২৮০ টাকার প্রে-অর্ডার শিডিউলের সঙ্গে যুক্ত করেন তিনি। পরে দরপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন রাত ২টার দিকে মেসার্স শাহীন এন্টারপ্রাইজের প্রো, শহীদ আলম তার লোকজন নিয়ে মান্নানের দরপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। শাহীন জেলা প্রশাসকের কাছে এমনটাই অভিযোগ করেছেন ত্রিমহোনী নতুন বাজারের ইজারা বঞ্চিত তাওসিফ ইবনে মান্নান। এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিককে মান্নান বলেন, পৌর প্রশাসন ও বিএনপির কিছু নেতার সমঝোতায় ইজারা চলে যাচ্ছে। তাদের পছন্দের লোকজনের হাতে।
ঘটনার বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুফিদুল আলম জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।