ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ফুলপুরে জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের বিরোধের দ্বন্দ্বে হামলার ঘটনায় একজনের পা ভেঙ্গে দিল প্রতিপক্ষ অহিদুল গংরা।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত (১৬ মার্চ) ফুলপুর উপজেলার রহিমগঞ্জ ইউনিয়নের বরুয়াই গ্রামের মোঃ আমিনুল ইসলামের সাথে পৈত্রিক সম্পত্তি ও ক্রয়কৃত সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল প্রতিপক্ষ তোজাম্মেল হক মাষ্টারের সাথে। ১৬ মার্চ সন্ধ্যায় আমিনুল ইসলামের ভাতিজা মোয়াজ (২২) তার নিজ বাড়ি থেকে নিমতলা বাজারে যাওয়ার পথে বরুয়াই মসজিদ সংলগ্ন পাকা রাস্তায় পৌঁছা মাত্রই প্রতিপক্ষ তোজাম্মেল মাষ্টারের পুত্র সাঈদ মোয়াজকে গালাগাল শুরু করে। এতে মোয়াজ প্রতিবাদ করে। উপস্থিত লোকজন উভয় পক্ষকে দূরে সরিয়ে দিয়ে আপাতত ঘটনার অবসান ঘটায়। পরবর্তীতে আমিনুল ইসলাম ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে গেলে কোন বাক বিতন্ডা ছাড়াই তোজাম্মেল মাষ্টারের আরেক পুত্র অহিদুল হক দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তার পায়ে আঘাত করলে পা ভেঙ্গে যায়। তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন তাকে তাৎক্ষণিক তারাকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। হাসপাতালের ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এদিকে অহিদুল গংরা দেশীয় অস্ত্র সহ আমিনুল হকের বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে বাড়ির লোকজনদের মারধর করার চেষ্টাসহ হুমকি ধামকি দিতে থাকে এবং বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে বিষয়টি তারাকান্দা সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কমান্ডারের কাছে লিখিতভাবে জানালে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সূত্রমতে, ফুলপুর উপজেলার রহিমগঞ্জ ইউনিয়নের বরুয়াই গ্রামের আমিনুল ইসলামের সাথে তোজাম্মেল হক মাষ্টারের সাথে দীর্ঘদিন যাবত একাধিক জমির প্লট নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
আমিনুল ইসলাম জানান, আমাদের বরুইয়া গ্রামের রহিমগঞ্জ মৌজায় বি,আর,এস ৪৮৪ ও ৪৭৯ দাগের ২১ শতাংশ জমি পৈত্রিকসূত্রে ও ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত হই। কিন্তু তোজাম্মেল মাষ্টার উক্ত জমি প্রভাব খাটিয়ে জবর দখল করে রেখেছে। তাছাড়া একই মৌজার ৩৮৮ দাগের ৫৬ শতাংশ জবর দখল করে রেখেছে এবং অন্য একটি দাগের ৩২ শতাংশ জমি তোজাম্মেল মাষ্টার ২৫ বছর পূর্বে আমাদের কাছে বিক্রি করে। অদ্যবধি দলিল করে দেয়নাই। জমিটি ২০ বছর আমার দখলেই ছিল। পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়ার পর তোজাম্মেল মাষ্টার ৫ বছর যাবত দখল করে রেখেছে। মূলত এসব বিষয় নিয়েই দীর্ঘদিন যাবত মতবিরোধ থাকায় আমাদের সাথে বিরোধ চলে আসছে। এসব বিষয় নিয়ে একাধিক বার সালিশ হয় সর্বশেষ সালিশে এলাকার ইউপি মেম্বার আবু তাহের, খাদ্য ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন ও শহিদ ডাক্তারকে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য শালিসে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অদ্যবধি কোন মিমাংশা উপনিত হতে পারিনি। এসব ঘটনার জেরে অযথা আমাদেরকে হয়রানি করছে এবং প্রভাব খাটিয়ে আমাদের সম্পত্তি জবর দখল করে রেখেছে। ১৬ মার্চ তারিখে আমার উপর হামলার ঘটনায় আমি বিজ্ঞ আদালতে মামলা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ বিষয়ে তোজাম্মেল হক মাষ্টারের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে পারিবারিক ভাবে বসে মিমাংসার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা নিজেরাই বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টায় আছি।