ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার: ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন ইউনিয়নের বেনীপুর গ্রামের পিতা-পুত্র তিন আওয়ামীলীগ নেতা জবর দখল করে রেখেছে তিন এতিম কন্যার পৈত্রিক সম্পত্তি। তাছাড়া বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে চাকুরী দেওয়ার কথা হলেও টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সময় পিতা ও দুই পুত্র আওয়ামীলীগ নেতা মিলে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছিল। সারা ইউনিয়নেই ছিল তাদের ত্রাসের রাজত্ব।
সূত্র মতে, উপজেলা কৃষকলীগ সদস্য শরাফ উদ্দিন তার পুত্র জহিরুল ইসলাম বাবুল ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি এবং অন্যপুত্র মাহমুদুল হাসান সবুজ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। এলাকায় জমি দখল, টাকার বিনিময়ে বিজিএফ, বিজিডি, ন্যায্য মূল্যে চাউলের কার্ড বিতরণ করতো। শুধু তাই নয় নিজ আত্মীয় স্বজনদের সম্পত্তি জবর দখল করতেও দ্বিধা বোধ করেনি।
জানা যায়, বাবুলের দাদা সায়েদ আলী এবং তাই এবাদুল্লাহ পৈত্রিক সম্পত্তির সমান সমান অংশ। এবাদুল্লাহর তিন কন্যা যথাক্রমে, এশিয়া খাতুন, আম্বিয়া খাতুন ও রহিমা খাতুন। কোন পুত্র সন্তান ছিল না। ১৯৮৫ সনে ভূমি জরিপ রেকর্ড অনুযায়ী এবাদুল্লাহর ৫৯ শতাংশ জমির মধ্যে তিন কন্যা ৪০ শতাংশ জমির মালিক। উক্ত জমি শরাফ উদ্দিন ও তার দুই পুত্র বাবুল ও সবুজ অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে দীর্ঘদিন যাবত। ইতিমধ্যে, সবুজ বিষ্ফোরক মামলায় জেল হাজত খেটে জামিনে বেরিয়ে এসেছে। জেল থেকে বেরিয়ে এসে এলাকায় পুনরায় ত্রাসের রাজ্য কায়েম করেছে।
এতিম তিন সন্তানেরা জানান, শরাফ উদ্দিনের পুত্র আওয়ামীলীগ ওয়ার্ড সভাপতি বাবুল তাদের প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। তাদের বাড়ি ঘরে একাধিক বার সবুজ সহ হামলা করেছে। তাদের সম্পত্তি চাইলে বাবুল, সবুজ বাড়ি ঘরে হামলা করে মারধর করে। তাদের ভয়ে এক কন্যা অন্যত্র চলে গেছে। বাকীদের এলাকা ছাড়া করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
সূত্র জানায়, বাবুল বেনীপুর পারিবারিক গোরস্থানের নামে কমপক্ষে ২০টির অধিক উন্নয়ন প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি লাখ লাখ টাকা এবং গম চাউল আত্মসাৎ করেছে। বিগত সরকারের মন্ত্রী, এমপি, যুবলীগ নেতা মনিরের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে এসকল অপকর্ম করেছে। ভুক্তভোগী তিন কন্যা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছে। অন্যদিকে, এলাকায় মৃত হাসমত আলীর বিধবা স্ত্রীর কাছ থেকে তার ছেলের চাকুরী দেওয়ার কথা বলে সবুজ টাকা নিয়েছে। ৭/৮ বছর হলো টাকা দিচ্ছে না।
এলাকাবাসী জানান, এলাকায় প্রায় ২০টি পরিবারের নামে ন্যায্য মূল্যে রেশন কার্ড ছিল। তাদের নামে রেশন উঠিয়ে বাবুল আত্মসাৎ করেছে। প্রকৃত কার্ডদারীরা কিছু বললে তাদেরকে মামলা বা পুলিশ দিয়ে হয়রানী করার হুমকি দিতো। তাই কেউ প্রকাশ করতে সাহস পেত না।
এলাকাবাসী পিতা-পুত্র তিন আওয়ামীলীগ নেতার বিচার দাবী করেছে। সেই সাথে এতিম তিন কন্যার জমি উদ্ধারের দাবী জানিয়েছে প্রশাসনের কাছে।