কিশোরগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা —কিশোরগঞ্জের জেলা তাঁতীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়দানকারী, পতিত স্বৈরাচারের দোসর ও ভুয়া সাংবাদিক মাসুদুল ইসলাম সবুজ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার(৩ মে) দুপুরের দিকে পশ্চিম পিরিজপুরের বাসিন্দা ফারুক আহম্মদ বাদি হয়ে বাজিতপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগীসূত্রে জানা যায়, ফারুক আহাম্মদ তার নিজস্ব জমিতে ফার্ম নির্মাণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ফার্মের জন্য নির্ধারিত জমিটি নিচু হওয়ায় জমিটি ভরাট করার জন্য তার নিজস্ব পুরাতন পুকুর হতে মাটি উত্তোলন করেন। ফার্মের নির্ধারিত জমির পাশেই পুকুরটি অবস্থিত। সাংবাদিক পরিচয়ে অভিযুক্ত মাসুদুল ইসলাম সবুজসহ আরো কয়েকজন কথিত সাংবাদিক দীর্ঘদিন যাবত চাঁদা দাবি করে আসছিল ব্যবসায়ী ফারুক আহাম্মদের কাছে।
ভুক্তভোগীর দাবি, চাঁদা না দেওয়ায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের হুমকি দিচ্ছে স্বৈরাচারের দোসর তথাকথিত সাংবাদিক সবুজ। ২ মে বিকাল ৪ টার দিকে সবুজ আরো কয়েকজন সহযোগীদের নিয়ে ভুক্তভোগীর পুকুরে এসে বলেন এখানে মাটি কাটলে তাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। তার দাবীকৃত টাকা না দেওয়ায় সবুজ সংবাদ প্রকাশসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতির হুমকি প্রদান করে।
স্থানীয়রা বলেন, এই কথিত সাংবাদিক সবুজ
পার্শ্ববর্তী কটিয়াদী উপজেলার তেলিচাড়া গ্রামের মৃত আসাদুজ্জামানের ছেলে। স্বৈরাচার ও পতিত আ’লীগ সরকারের দোসর। সে আওয়ামী সরকারের আমলে জেলা তাঁতী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে দাপট দেখালে বর্তমানে নিজেকে যুবদল নেতা পরিচয় দেয়। এলাকার লোকজন ও সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, সে এর আগেও ভুয়া সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় কটিয়াদী উপজেলার করগাঁও এলাকায় জনতার হাতে আটক হয়ে জেল খাটে। জেলার বিভিন্ন স্থানে মাটি ও বালু কাটার সময় সে নিয়মিত চাঁদাবাজি করে বলে তার নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। সে একেক সময় একেক সংবাদ মাধ্যমের পরিচয় দেয়। যদিও মিডিয়াতে কাজ করার মতো তার কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরোতে না পারলেও সে সাংবাদিক পরিচয়ে নিয়মিত চাঁদাবাজি করছে।
আরো জানা যায়, সে নিজে কখনো সংবাদ লিখতে পারে না। এমনকি শুদ্ধভাবে পড়তেও পারে না। তারপরেও একটি মোটরসাইকেলে বিভিন্ন মিডিয়ার স্টিকার লাগিয়ে বেশ ভূষায় বড়মাপের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে চাঁদাবাজি করে। জেলার যেখানেই মাটি কাটা, বালু উত্তোলন, ড্রেজার, ভেকু চলে সেখানেই সবুজ তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে হাজির হয়। চাহিবামাত্র চাঁদা দিলেই অনিয়মের বিষয়টি সামনে না এনে ধামাচাপা দেয় সে। আর দিতে না পারলেই প্রশাসনকে জানিয়ে তিলকে তাল বানিয়ে ফেলে। এ ধরনের অপসাংবাদিক ও মূর্খ ব্যক্তিদের জন্য বদনাম হচ্ছে প্রকৃত সংবাদকর্মীদের।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে বাজিতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, এই ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছি, সেটা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।