মুক্তাগাছায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ এলাকায় জনরোষ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ঘটনার সময় ভাই অনুপস্থিত থাকা সত্বেও তাকে আসামী করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় জনরোষের সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র মতে, উপজেলার কুমারগাতা ইউনিয়নের ঘোষবাড়ী এলাকার আলী হোসেন ২০০৩ সালে মারা যান। মৃত্যু কালে তিনি চার কন্যা ও দুই পুত্র রেখে যান। চার কন্যার বিয়ে হয়। দুই পুত্র দেলোয়ার ও বেলায়েত পিত্রালয়ে থেকে সংসার দেখাভাল করেন। দেলোয়ার সংসারের হাল ধরে ছোট ভাই বেলায়েতকে লেখাপড়া করান। ২০০৫ সাল পর্যন্ত দেলোয়ার ও বেলায়েত একান্নভুক্ত সংসারে থাকেন বলে দেলোয়ারের বড় বোন জুলেখা জানান।

তিনি জানান, ২০০৫ সালের পর বোন আছমার স্বামী রফিকুল ইসলাম ও রেহানার স্বামী উকিল উদ্দিন ষড়যন্ত্র করে কৌশলে তাদেরকে পৃথক করে দেন। এবং পৈত্রিক যাবতীয় সম্পত্তি বেলায়েত এর দখলে দিয়ে দেন। ২০১০ সালে বড় বোন জুলেখা খাতুনের সুপারিশে দেলোয়ারকে পাঁচ কাঠা জমি আবাদ করার জন্য দেন। উক্ত জমিতে দেলোয়ার মাছ চাষ করে। ১ বছর যেতে না যেতেই ২০১১ সালে দুই ভগ্নিপতি রফিকুল ও উকিল উদ্দিন দেলোয়ার কে মারধর করে উক্ত মৎস্য খামারটি তাদের দখলে নেয়, যা অদ্যবধি তাদের দখলে আছে। বেলায়েত হোসেন দুই ভগ্নিপতিকে সাথে নিয়ে অত্যন্ত কৌশলে দেলোয়ার ও তার বড় বোন জুলেখার প্রায় ৭ কাঠা জমি পিতার ঋণ আছে বলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে লিখে নেয়। দুই বোন জামাই ও বেলায়েত দেলোয়ারকে তার পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য বিভিন্ন কৌশল আটে। দেলোয়ার জমি চাইলেই তার মাকে ম্যানেজ করে বেলায়েত ও তার বোন জামাই তিন জন মিলে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে। ইতপূর্বেও ৫/৭ বার দেলোয়ারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে। মামলা হলেও তদন্তে গিয়ে প্রত্যেকটি মামলাই মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ইতিমধ্যেই বেলায়েত তার মায়ের সম্পূর্ণ সম্পত্তি নিজে লিখে নিয়ে গেছেন বলে তার বড় বোন জুলেখা জানান। গত ১০/০৫/২০২৫ ইং তারিখ দেলোয়ার ও বেলায়েত এর বড় বোন জুলেখার ছেলে মঞ্জুর রহমান তার নানার পুকুর থেকে মাছ ধরে। এ খবর পেয়ে বেলায়েত ও তার স্ত্রী পারভীন মোবাইল ফোনে তাকে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে মঞ্জুর এর মা জুলেখা বেগম তার পিতার অর্থাৎ বেলায়েতের বাড়িতে গেলে তাকে কুড়াল দিয়ে কুপ দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে সেখান থেকে রক্ষা করে। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বেলায়েত পূর্বের ন্যায় মাকে দিয়ে মাকে হত্যার চেষ্টার নাম করে মুক্তাগাছা থানায় একটি সাজানো মামলা করে। মুক্তাগাছা থানার মামলা নং-১৫, তারি: ১৪/০৫/২০২৫ ইং। অথচ ঘটনার সময় দেলোয়ার হোসেন বাড়িতেই ছিল না। অথচ তাকে মামলায় ১নং আসামী করা হয়। থানাপুলিশ দেলোয়ারকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। পরবর্তীতে দেলোয়ার আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসে। মূলত মাছ ধরা নিয়ে মা, মেয়ে, নাতিন কথা কাটাকাটি এবং এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কাল্পনিকভাবে সাজিয়ে মামলা করা হয়েছে। নাতী তার নানার সম্পত্তির দাবী করায় এ মামলা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বেলায়েতের মায়ের কোন সম্পত্তি নাই বলে জুলেখা বেগম জানান। এদিকে উক্ত মিথ্যা মামলার ঘটনার জের ধরে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, মৃত আলী হোসেনের সম্পত্তির ভাগিদার দুই পুত্র সমান সমান অথচ এক পুত্র বেলায়েত এককভাবে সমস্ত সম্পত্তি দুই বোন ও তাদের স্বামীর সহযোগিতায় করায়াত্ব করে রেখেছে। এ ব্যাপারে মৃত আলী হোসেনের পুত্র সম্পত্তির প্রকৃত হিসাব দেখলেই আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।

দেলোয়ার তার পৈত্রিক সম্পত্তির প্রকৃত হিস্যা দাবী করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।