ময়মনসিংহ আঞ্চলিক প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় স্কুল কর্মচারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার ধর্ষিতার মা আসমা বাদী হয়ে মুক্তাগাছা থানায় অভিযোগ করে।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার বিন্নাকুড়ি হাই স্কুলের পরিচ্ছন্নতা কর্মী আশিকুর রহমান (৩০) বাদীনীর কন্যা দশম শ্রেণির ছাত্রী স্কুলে যাওয়া আসার সময় তাকে উত্তপ্ত করতো। তাদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাকে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। সর্বশেষ ১৯/০৪/২০২৫ ইং তারিখ উপজেলার সৈয়দপাড়া এলাকায় জনৈক শাহজাহানের বাড়িতে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরবর্তীতে বিষয়টি তার মেয়ে তাকে জানালে বিষয়টি আশিকের পরিবারকে জানানো হয়। কিন্তু আশিকের পরিবার থেকে তাদেরকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগে জানা যায়।
অভিযোগের ঘটনার পর সরেজমিনে গেলে আশিকের বোন মোছাঃ পারভীন আক্তারের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, আশিকুর রহমান ৯মাস পূর্বে বিন্নাকুড়ি হাই স্কুলে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে চাকুরী নেয়। ৩মাস পূর্বে উক্ত মেয়েটি (ভিক্টিম) আশিকের মোবাইলে ফোন দিয়ে কথা বলে এবং প্রেম করার কথা বলে। কিন্তু আশিক বিবাহিত বলে জানানোর পরও তাকে ডিস্টার্ব করতে থাকে। গত বৃহস্পতিবার তাকে মিথ্যা কথা বলে চেচুয়া বাজার হাজী মার্কেটে দেখা করতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর তাকে বিয়ে করতে চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে বিষয়টি আশিক তার স্কুলের শিক্ষক আব্দুল আজিজ মাস্টারকে জানায়। মাস্টার সাহেব আশিককে সেখান থেকে সরে যেতে বলেন এবং তিনি বিষয়টি দেখছেন বলে জানান। কিছুক্ষণ পর আজিজ মাস্টার সেখানে গিয়ে মেয়ের সাথে কথা বলে তাকে বুঝিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিন্নাকুড়ি তার অভিভাবকের কাছে বুঝিয়ে দেন। ঐ দিন রাতেই ১২টার দিকে মেয়ে সহ ৪০/৫০ জন লোক আশিকের বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে ঘরে তুলে দেন এবং বিভিন্নভাবে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। পরে রাত সাড়ে ৩টায় থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন এবং অভিভাবকের কাছে বুঝিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে আশিকের বোন মোছাঃ পারভীন আক্তার জানান, আমার জেঠাত ভাই মোঃ মিজানুর রহমান পদুরবাড়ী হাই স্কুলের শিক্ষক। ৯মাস পূর্বে আশিককে ৯লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিন্নাকুড়ি হাই স্কুলে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে চাকুরী দেন। চাকুরী হওয়ার পর জানতে পারেন স্কুলটি এমপিওভুক্ত নয়। তখন আশিক টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য চাপ দিলে তাকে ১লক্ষ টাকা ফেরত দেন ও বাকি টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। ইতিমধ্যেই, মিজানুর রহমান মাস্টার যাতে বাকি ৮লক্ষ টাকা ফেরত না দিতে হয় তাই উক্ত মেয়েকে দিয়ে আশিককে ফাসানোর চেষ্টা করছে এবং আমাদেরকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আমরা উক্ত ঘটনার পর শুক্রবার রাতে মেয়ে পক্ষের লোকজন ডেকেছিলাম প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য। আমরা আশিকসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে উপস্থিত রেখেছিলাম কিন্তু মেয়ে পক্ষের কোন লোকজন এখানে উপস্থিত হয়নি। অভিযোগের ঘটনা দেখানো হয়েছে ১৯/০৪/২০২৫ ইং তারিখ। এতদিন কোন মামলা করেনি। এখন কেন নাটক সাজিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে। পুলিশ সরেজমিনে ঘটনার তদন্ত করলেই আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
এ ব্যাপারে মামলাটি তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, মামলাটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানাতে পারবো।