বার বছর পর রায়, ময়মনসিংহে রাজনৈতিক মামলায় অধ্যাপক কাজল সহ ৪৬ আসামি খালাস

ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার—২০১৩ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় দায়ের হওয়া বহুল আলোচিত মামলায় দীর্ঘ ১২ বছর পর রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। রায়ে ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ডিজিটাল প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক জিএম আজহারুল ইসলাম কাজলসহ মোট ৪৬ জন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) ময়মনসিংহের একটি আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৫ মে বিএনপি-জামায়াত জোটের হরতাল চলাকালে হালুয়াঘাটে সহিংসতার অভিযোগ এনে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় তৎকালীন শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবীসহ স্থানীয় ৪৬ জনকে আসামি করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, তারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট, সড়ক অবরোধ, পুলিশের কাজে বাধা প্রদান ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে ছিলেন বর্তমান ধোবাউড়া ডিজিটাল প্রেস ক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক জিএম আজহারুল ইসলাম কাজল, সাবেক চেয়ারম্যান গাজিউর রহমান, প্রফেসর রুকুনুজ্জামান রুবেল, সুজন তালুকদার, মুশফিক তালুকদার, লুৎফর ফকির, এমদাদ ফকির, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল ফজল, মারফত আলী, কামরুল হাসান সুমন, জনি, এনামুল, এমদাদ বিশ্বাসসহ অনেকে।
দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে আদালত বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। সাক্ষ্য ও উপস্থাপিত আলামতে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু পাওয়া যায়নি।”
রায় ঘোষণার পর অধ্যাপক কাজল বলেন, “এটি ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলা। ১২ বছর ধরে হয়রানির শিকার হয়েছি। অবশেষে ন্যায়বিচার পেয়েছি। আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আক্তার হোসেন বলেন, “এই মামলার শুরু থেকেই এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল। আজ সত্যের জয় হয়েছে।”
খালাসপ্রাপ্ত অন্য আসামিরাও সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে তারা সামাজিকভাবে আবার সম্মান ফিরে পেয়েছেন।
রায়কে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই একে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে খালাসপ্রাপ্তদের পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।