মুক্তাগাছায় মিমাংসীত বিষয়কে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বিএনপি কর্মীকে আওয়ামীলীগ সাজিয়ে অপপ্রচার জনমনে ক্ষোভ

ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার: ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার সদাশিব বাড়ি গ্রামে একটি মিমাংসীত বিষয়কে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে একটি বিএনপি ও আলেম পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে একটি মহল। এ নিয়ে এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র মতে, সদাশিব বাড়ি গ্রামের হাজী আব্দুল বারেকের দুই পুত্র হাফেজ মাওলানা শহিদুল ইসলাম ও মুফতি হাফেজ মাওলনা মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম প্রায় চল্লিশ বছর যাবত ঢাকায় থেকে পড়ালেখা করে এবং সেখানেই মসজিদে ইমামতি ও মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। হাজী আব্দুল বারেক এর কন্যারাও আরবী শিক্ষায় শিক্ষিত একটি আলেম পরিবার। হাজী আব্দুল বারেক বাড়িতে একা থাকেন। হাজী আব্দুল বারেকের প্রায় দুই একর জমির মাঝখানে দুই কাঠা জমি রয়েছে পরশী মফিজ উদ্দিনের। উক্ত জমির সুবাদে মফিজ বারেকের জমির ভিতর দিয়ে চলাচল করে ফসলের ক্ষতি করে আসছিল। যার দরুন আব্দুল বারেক তার জমির সীমানা দিয়ে বেড়া দেন ক্ষতি এড়ানোর জন্য। গত তিন মাস পূর্বে মফিজ উদ্দিন তার দুই কাঠা জমিতে তার ছেলে সাইদুল ইসলামের বাড়ি করার জন্য স্থানীয় শরাফতের জমি দিয়ে মালামাল নিয়ে বাড়িঘর তৈরি করেন এবং পরবর্তীতে শরাফতের জমির আইল দিয়েই চলাচল করে আসছিল। ইতিমধ্যে শরাফত তার জমির আইল কেটে ফেলে। এতে সাইদুল তার বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা অনেকটা বন্ধা হয়ে যায়। কাদা দিয়ে বাড়িতে উঠতে হয়। পরবর্তীতে সাইদুল বাড়ি থেকে বের হতে হাজী আব্দুল বারেক এর জমি দিয়ে রাস্তা পাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ সহ প্রশাসনের কাছে আবেদন করে।

এ ব্যাপারে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম তারা স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে শালিস করেন। শালিসে মফিজ উদ্দিন ও আব্দুল বারেক উভয়ের সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় যে, হাজী আব্দুল বারেক এর জমির মাঝখানে যে দুই কাঠা জমি আছে তাহা আব্দুল বারেক নিবে এবং মফিজের বাড়ি সংলগ্ন হাজী আব্দুল বারেকের জমি থেকে মজিদ দুই কাঠা জমি নিবে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি এওয়াজ দলিল সম্পন্ন হবে। এবং আগামী এক মাসের মধ্যে দলিল রেজিষ্ট্রী সম্পন্ন হবে। ইতি মধ্যেই মফিজ উদ্দিনের পুত্র সাইদুল ইসলাম ও তার লোকজন হাজী আব্দুল বারেক ও তার আলেম পুত্রদের বিরুদ্ধে একটি পত্রিকায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রাচার করে এবং ফেইসবুকে আওয়ামীলীগ কর্মী হিসেবে উল্লেখ করে অপপ্রচার চালায়।

প্রকৃত পক্ষে, হাজী আব্দুল বারেক একজন বিএনপি কর্মী। তিনি নিজে তার এলাকায় বিএনপি অফিস করার জন্য জায়গা দিয়েছেন। তার ছেলেরা দীর্ঘদিন ঢাকায় থেকে ইমামতি ও মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে আসছেন।

এ বিষয়ে সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কথা হলে এলাকাবাসী জানান, মফিজের পুত্র সাইদুল ইসলাম ঢাকার ধানমন্ডি মোহাম্মদপুর এলাকায় শ্রমিক লীগের নেতা ছিলেন। ৫ই আগস্টের পর সেখান থেকে এসে পুরানো বোল পাল্টে নিজেকে বিএনপির কর্মী হিসেবে দাবী করে এলাকায় প্রভাব সৃষ্টি করছে। অথচ এলাকার সাধারণ মানুষ স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, সাইদুল এলাকার একটি ভদ্র ও আলেম পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করে সম্মানিত পরিবারের ভামমুর্তী ক্ষুন্ন করছে।

এ বিষয়ে মফিজ উদ্দিনকে বাড়ির সীমানার বেড়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, তার ছেলের বাড়ি করার পূর্বেই বেড়া দিয়েছিল হাজী আব্দুল বারেক। তার ছেলে সাইদুল শ্রমিক লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত কিনা জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেননা বলে জানান।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ বিষয়টি নিয়ে এলাকাতে শালিস হয়েছে এবং মিমাংসাও হয়েছে। ১৫ দিন থেকে ১ মাসের মধ্যে উভয় পক্ষ মিলে এওয়াজ বদল দলিল সম্পাদনের কথাও হয়েছে। কিন্তু তারপর মিমাংসীত বিষয়টি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালানো খুবই দুঃখ জনক। তিনি এ বিষয়ে নিন্ধা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।