ময়মনসিংহ সড়ক জনপথের জায়গা দখল করে দোকান

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি; ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়াগা দখল করে দোকান নির্মাণ ও ১২ লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে মুক্তাগাছা উপজেলা জামে মসজিদের মসজিদ পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে। মসজিদ কমিটির সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উদ্যোগে এ দোকনটি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানা যায়। বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদের মূলফটকের সামনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এ নিয়ে উপজেলার সচেতন মহলের ভিতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের মাসিক বেতন পরিশোধ করার জন্য মসজিদের আয়ের উৎস হিসেবে উপজেলা পরিষদের মূল ফটকের পাশে পরিষদের সীমানা ঘেষে বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের খালের উপর পাকা একটি দোকান নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন মসজিদ কমিটি। মুক্তাগাছা পৌর এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খাল এটি। শহর এলাকার সমস্ত ড্রেনের পানি এ খাল দিয়ে আয়মান নদীতে যায়।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আতিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেনসহ মসজিদ কমিটির লোকজন মিলে মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিনের বেতন পরিশোধে আয়ের উৎস হিসেবে সড়ক ও জনপথের খালের উপর ওই নির্মাণাধীন দোকানটি ভাড়া দেওয়ার জন্য এলাকার লোকজনের উপস্থিতিতে দর-দাম তোলেন। এতে স্থানীয় স্টেশনারি ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম ১২ লাখ টাকায় দোকানটি কিনেনেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদের মূল ফটকের পাশে, উপজেলা পরিষদ সীমানা ঘেষে সড়ক ও জনপথের খালের উপর আরসিসি পিলার করে দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪টি আরসিসি পিলার স্থাপন করার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি যদি এভাবে সরকারি জমি দখল করে স্থায়ী পাকাঘর নির্মাণ করে বাকি সাধারণ মানুষ আরও উৎসাহ পাবে। আমরা এব্যাপারে উচ্চতর প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমারা মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন সঠিকভাবে দিতে পারি না। তাই উপজেলা পরিষদের মূল ফটকের সামনে একটি দোকান নির্মাণ করার প্রস্তাব আমাদের মাসিক মিটিংয়ে পাশ হয়।

এব্যাপারে মসজিদ কমিটির সভাপতি, মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আতিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন দেওয়ার জন্য আমরা এখানে একটি দোকান নির্মাণ করার এ উদ্যোগ নিয়েছি। দোকনটি বিক্রির জন্য লিখিত না মৌখিক ভাবে ওপেন ডাক দিয়েছিলাম। উপস্থিত লোকজনের মধ্যে ১২ লাখ টাকায় দোকানটি বিক্রি করা হয়েছে। সড়ক ও জনপথের জায়গায় দোকান নির্মাণের ব্যাপারে জনপথ কর্তৃপক্ষ জানে কি না জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এ টাতো মসজিদের উন্নয়নের কাজ, আপনিও মুসলিম, আমিও মুসলিম। একটা ধর্মীয় ব্যাপারে এভাবে যদি ই করেন তাহলে খুবই দুঃখজনক।
এব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ময়মনসিংহের প্রকৌশলী এবিএম সাদ্দাম হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সড়ক-জনপথের জায়গায় পাকা দোকান নির্মাণের বিষয়ে আমরা কিছু জানিনা। আমরা খোঁজ নিচ্ছি আমাদের জায়গায় এমন হলে সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয় হবে।