নির্বাচন কমিশনের পিয়নের কোটি টাকার সম্পদ, ভুক্তভোগীদের হাহাকার

 

 

 

 

 

রূপান্তর বাংলা
এডিটর, শাহীন আহমেদ।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পিয়ন হয়েও গড়ে তুলেছেন কোটি টাকার সম্পদের পাহাড়। এলাকায় জমি দখল, প্রতিবেশীদের হয়রানি ও আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগে ঘিরে রেখেছে তাকে। এমনই এক আলোচিত নাম—মোঃ রিপন শেখ।

জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার বগার পাড় গ্রামের মৃত আবুল হোসেন শেখ ও মোছাঃ হেনা বেগমের ছেলে রিপন শেখ চাকরি করেন নির্বাচন কমিশনে পিয়ন পদে। অথচ তার আয়ের সাথে সঙ্গতিহীন বিপুল সম্পদ এখন প্রকাশ্যে এসেছে।

অভিযোগ অনুযায়ী—
২০১৫-১৬ সালে জামালপুর সদরের জঙ্গলপাড়া মৌজায় ৩.৫ শতাংশ জমি ও বাড়ি নির্মাণে ব্যয় করেন ২৭ লাখ টাকা। ২০২০ সালে সরিষাবাড়ীর পোগলদিঘা ইউনিয়নের বগার পাড় গ্রামে ৪০ শতাংশ জমি কিনেন ৫০ লাখ টাকায়। রাস্তার ধারে জমি হওয়ায় সেখানে কাটাতারের বেড়া দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করেছেন তিনি।

এরপর ২০২২ সালে বড় ভাই শামীম শেখের কাছ থেকে ১৪ শতাংশ জমি ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকায় ক্রয় করেন। ২০২৪ সালে ছোট ভাই রুবেল শেখের কাছ থেকে পাকা বাড়িসহ ৫.৫ শতাংশ জমি নেন ২৩ লাখ টাকায়। চলতি বছর আবারও একই গ্রামে রাজ্জাক মিয়ার কাছ থেকে ১৮ শতাংশ জমি বায়নাপত্র করে ভোগদখল করছেন ৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকায়।

শুধু জমিই নয়—ঘরে দামি আসবাবপত্র, স্ত্রী ও কন্যার জন্য প্রায় ১২ লাখ টাকার অলংকারও রয়েছে তার। অভিযোগ আছে, বিলাসবহুল জীবনযাপন ও সন্তানদের ব্যয়বহুল পড়াশোনায় টাকা ঢেলেও তিনি কোনো সংকটে পড়েন না।

স্থানীয়রা বলছেন, রিপন শেখ শুধু সম্পদ গড়ে তুলেই থেমে থাকেননি। গুরুস্থানের কবরের উপর দিয়ে বাথরুমের পানি নিষ্কাশনের জন্য পাইপ বসানো থেকে শুরু করে প্রতিবেশীদের বিদ্যুৎ সংযোগে বাধা, এমনকি সরকারি রাস্তা দখল করে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন।

এ নিয়ে একাধিকবার এলাকায় সালিশ হলেও তার আচরণে পরিবর্তন আসেনি। বরং প্রতিশ্রুতি দিলেও জমি ফেরত দেননি, অপকর্ম কমাননি।

ভুক্তভোগী মোঃ রাসেল বলেন,
“রিপন শেখ আমাদের জমি দখল করছে, রাস্তা আটকে দিচ্ছে, বিদ্যুৎ সংযোগে বাধা দিচ্ছে। প্রতিবাদ করলে হামলা করে হুমকি দেয়। আমরা ভীষণ অসহায় অবস্থায় আছি।”

প্রতিবেশী মোঃ হাফিজুর মুন্সীরও জমির অংশ কাটাতারের বেড়া দিয়ে দখল করেছেন তিনি। বাধা দিলে হামলা ও হুমকির শিকার হন হাফিজুর।

স্থানীয়দের অভিযোগ, একজন সরকারি চাকুরিজীবী পিয়ন পদে থেকে কীভাবে কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভুক্তভোগীরা এর সঠিক তদন্ত ও যথাযথ বিচারের দাবি জানিয়েছেন।