মুক্তাগাছা বাহেঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের করুণ অবস্থা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকার বাসীর একগুচ্ছ অভিযোগ

রূপান্তর বাংলা।
এডিটর, শাহিন আহমেদ।

ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার ঃ ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার ১৫ নং বাহেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের করুন অবস্থা। বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কাগজে কলমে ১৪৩ জন থাকলেও বাস্তবে আছে ৫০/৬০ জন। এছাড়া স্কুলে ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩ জনই স্থানীয় বাসিন্দা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ এদের বিরুদ্ধে রয়েছে এন্তার অভিযোগ। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী ও ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকসহ ১৫৬ জনের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাই। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ বছর যাবৎ একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তার দায়িত্ব পালনের চাইতে এলাকায় দেন দরবার নিয়ে বেশি ব্যাস্ত থাকেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। বিদ্যালয়ে ক্লাস করানোর জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণি কক্ষ নাই। পুরাতন বিল্ডিং পরিত্যাক্ত ঘোষণা করার পর বিক্রি করে দেওয়া হয়। একটি পুরনো বিল্ডিং ও একটি টিন সেট ঘরে ক্লাস করানো হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাকফিজুর রহমান এর বিরুদ্ধে এলাকার বাসীর অভিযোগ তিনি ক্লাস না করে দোকানে বসে আড্ডা দিয়ে থাকেন। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে স্কুলে দপ্তরী নিয়োগ করার কথা বলে একাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ক্লাস না নিয়ে চায়ের দোকান ঘরে বসে আড্ডায় ব্যস্ত থাকেন বেশি সময়, স্কুলে সময় মতো আসেন না। নিজের স্বার্থরক্ষায় তিনি স্কুলের মাঠের জমি ছেড়ে দিয়েছেন এতে স্কুল তথা সরকারি ভাবে ক্ষতি সম্মুখীন। অত্র স্কুলের ১৫ বছর যাবৎ আধিপত্য ও এলাকার প্রভাব বিস্তার করে রেখেছেন। তার অনিয়মের জন্য তাকে পূর্বে একবার শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছিল। প্রভাব খাটিয়ে ৩ দিনের মাথায় পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে আসেন। তার সাথে এলাকার সাধারণ মানুষসহ ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকদের সম্পর্কে ভালো না। এছাড়া স্কুলের পূর্নমিলনী অনুষ্ঠানে কোনো সহযোগিতা করেননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাকফিজুর রহমান। ছাত্র ও অভিভাবকদের সচেতন করতে স্কুলে কোনো মা সমাবেশ/ অভিভাবক সমাবেশ করনেনি কখনো। এলাকার সাবেক মেম্বার আবুল হোসেন, স্থানীয় রফিকুল ইসলাম, চাঁনমিয়া, মোঃ গিয়াস উদ্দিন সহ প্রায় ১৫/২০ জন স্থানীয় লোকজনদের সাথে কথা বললে তারা জানান স্থানীয় শিক্ষকরা এলাকার কোনো মোটিবেশনাল কাজ করে না। ছাত্র-ছাত্রীরা আসবে কীভাবে শিক্ষকরা স্কুল ছেড়ে চায়ের দোকানে আড্ডা দেন। নিয়মিত শিক্ষকদের স্কুলে উপস্থিতি ও লেখাপড়া করার মতো মনমানসিকতা তাদের নাই। যদি থাকতো তাহলে সুন্দর ও পরিছন্ন বিদ্যালয়টি এমন অরক্ষিত থাকতো না। এলাকার বাসীর দাবী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ স্থানীয় শিক্ষকদের বদলী করে। নতুনভাবে শিক্ষক বদলী করে আনলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে এবং অভিভাবকরা তাদের ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে পাঠাবে। মূলত এলাকাবাসীর ক্ষোভ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের প্রতি। তার প্রতি এলাকাবাসীর বিরুপ মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী তার বদলী এবং তদন্ত পূর্বক বিচার দাবী করছে।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাকফিজুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে আসতে চায় না। স্কুলের স্ক্যাচ ম্যাপ এরিয়ার তিনটি মাদরাসা রয়েছে। তারা মাদরাসায় চলে যাচ্ছে। আমাদের কিছুই করার নাই। আমার পঞ্চম শ্রেণিতে দুইজন ছাত্রী একজন আসে না, অন্যজন একা হয়ে গেছে। সেও আসতে চায় না। আমি কি করতে পারি।