ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার ঃ ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ১৪ মাসের শিশু ধর্ষন নিয়ে জনমনের সংশয় দেখা দিয়েছে। অনেকেই এই ঘটনা নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেছে। অনেকে মন্তব্য করেছেন পারিবারিক কলহ ও স্হানীয় গ্রাম্য রাজনীতির ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বলির পাঠা বানানো হয়েছে।
জানাযায় গত ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং তারিখ উপজেলার নিজকলমোহনা গ্রামে ১৪ মাসের শিশু ধর্ষনের শিকার হয়। এ ব্যাপারে মুক্তাগাছা থানায় মামলা হয়েছে। মামলা নাং- ০৭ ০৯/০৯/২০২৫। পুলিশ আসামি মাসুম (২০) গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
সূত্রমতে, নিজকলমোহনা গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের পুত্র শাজাহান ভ্যানচালক তার চাচা মৃত আব্দুল রাজ্জাকের পুত্র মাসুম একই বাড়িতে বসবাস করেন। মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ৫ পুত্র মাসুম সহ সবাই ঢাকায় থেকে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। বাড়িতে তাদের পরিবার পরিজন বসবাস করেন। মাসুম বোকা প্রকৃতির লোক। ঘটনার ১৫ দিন পূর্বে বাড়িতে এসে বিয়ে করেন। নতুন বউ নিয়ে বাড়িতেই ছিল।
এদিকে গিয়াস উদ্দিনের ১ পুত্র ৪ কন্যা সবারই বিয়ে হয়ে গেছে। মেয়েরা যার যার স্বামীর বাড়িতে থাকে। শাজাহান ২ সন্তান সহ স্ত্রী ও মাকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। শাজাহানের মা শাজেদা বেগম মধ্য বয়সী নারী। দুই বছর পূর্বে এ বয়সে পূনরায় বিয়ে করে মধুপুর এলাকার বিল্লাল নামের এক লোককে। তার দ্বিতীয় স্বামী নিয়ে প্রথম স্বামীর এ বাড়িতেই ছেলে শাজাহানের সাথেই বসবাস করে। এ নিয়ে রাজ্জাকের পুত্র মাসুম ও অন্যান্যদের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল। মাসুমের ভাই আলমাছ আলীর বক্তব্য তার চাচি বিয়ে করেছে সে তার স্বামীর বাড়ি থাকুক না হয় তার পিতার বাড়িতে থাকুক কিন্ত‘ এ বাড়িতে স্বামী নিয়ে থাকতে পারবে না কারণ শাজেদা বেগম এ বাড়ির কেউ না। আমরা সবাই ঢাকা থাকি বাড়িতে শুধু মহিলারা থাকে। কোনো পরপুরুষ এ বাড়িতে থাকতে পারবে না। এ নিয়ে গ্রামে একাধিক শালিস হয় কিš‘ গ্রাম্য রাজনীতির কারণে কোনো সুরাহা হয়নি। শাজাহানের মা শাজেদা বেগম তার বর্তমান স্বামী বিল্লালকে নিয়ে কুটকৌশলে এবং স্হানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকদের সহায়তায় আলমাস ও মাসুমদের বাড়ি ভিটার জমি তাদের কাছে বিক্রি করার জন্য চাপ দেয়। কিš‘ তারা তাদের একমাত্র পৈতৃক বিটা বিক্রি করতে রাজি হয় নাই। এলাকা থেকে জানা যায় উক্ত শাজেদার জন্য তার আশেপাশের ১৮ টি পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র সরে গিয়ে থাকতে হছে বলে মাসুমের চাচা ও চাচাতো ভাই ও মা হাছিনা খাতুন জানান। এলাকা থেকে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে এবং মাসুমের চাচাতো ভাই হাবিবুর রহমান এর কাছ থেকে জানা যায় তার চাচি শাজেদা খাতুন এর বর্তমান স্বামী একজন ডলার প্রতারক। মধুপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় মানুষ জিম্মি করে ও ডলার প্রতারণা করে থাকে এবং এ বাড়িতে আত্মগোপনে নিরাপদে অবস্থান করে থাকে। এলাকাবাসী শাজেদার বর্তমান স্বামী বিল্লালের আসল পরিচয় ও তার কর্ম নিয়ে পুলিশী তদন্তের দাবী জানান।
মাসুমের মা হাছিনা খাতুন জানান ঘটনার দিন কোনোকিছুই ঘটে নাই। আমার মাসুম তার ভাতিজী ১৪ মাসের শিশুকে কোলে নিয়েছিল তার পরেই শাজেদা শিশুটিকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরেই ধর্ষণের নাটক সাজিয়ে চিল্লাচিল্লি শুরু করে। ঘটনার পরপরই আমার ভাতিজা হাবিবুর রহমানকে জানাই সে এসে শিশুটিকে নিয়ে মুক্তাগাছা হাসপাতাল ডাক্তারের কাছে যায়। শিশুর কোনোকিছু হয়নি বলে ডাক্তার জানায়। তারা পরিকল্পিত ভাবেই এই শিশুটিকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে নিয়ে যায় সেখানেও কিছু হয়নি বলে ডাক্তার জানায়। পরে তারা হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশকে অবহিত করে মামলা প্রক্রিয়া করে বলে হাবিবুর রহমান জানান।
এদিকে শাজেদা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় কিছু লোককে ম্যানেজ করে এনে ঘুমন্ত মাসুমকে ঘর থেকে ডেকে বের করে তার ঘরে নিয়ে লোক দিয়ে পিটিয়ে শিকারোক্তি নেয়। মাসুমের মা হাছিনা খাতুন জানান আমার পুত্রের আর্ত চিৎকারে আমি ঘুম থেকে উঠে তাদের ঘরের কাছে গেলেই আমাকে মেরে ফেলা হবে হুমকি দেয়। তিনি জানান আমার বাড়ি ভিটার জমি নিয়ে উৎখাত করার জন্যই শাজেদা পরিকল্পিত ভাবে আমার ছেলের উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মামলা করে জেলে ঢুকিয়েছে। তিনি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার দাবী করেন।