ফিরোজ খান বিশেষ প্রতিনিধি–নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় আধিপত্য বিস্তারে, চর দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত (৫)জন নিহত,আহত হয়েছেন (১০)জন।
মঙ্গলবার, (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে এ তথ্য জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ওসি সাইফুল আলম।
স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, আজ সকাল আনুমানিক (১০)টা থেকে সুখচর ইউনিয়নের জাগলার চরে দিনভর থেমে থেমে সংঘর্ষ ঘটে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর পর সংঘর্ষ থামলেও সেখানে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মেঘনার বুকে জেগে ওঠা নতুন চর দখলকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে সুখচর ইউনিয়নের জাগলার চরে স্থানীয় মনির মেম্বার গ্রুপ ও শান্ত গ্রুপের সংঘর্ষ চলছিল।
উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে দু’পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে সংঘর্ষ হয়। এখন পর্যন্ত পুলিশ পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাইফুল আলম সোনালী কণ্ঠ কে জানান, ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বর্তমানে পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এখন পর্যন্ত পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে আলাউদ্দিন (৪০) উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ গ্রামের ছেরাং বাড়ির মহিউদ্দিনের সন্তান। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জাগলার চরের জমি সরকার এখন পর্যন্ত কাউকে বন্দোবস্ত দেয়নি। এ সুযোগে (৫) আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের ‘কোপা সামছু বাহিনী’ জাগলার চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর সুখচর ইউনিয়নের ‘আলাউদ্দিন বাহিনী’ জাগলার চরের জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। একপর্যায়ে আলাউদ্দিন বাহিনী আরও বেশি দামে কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর দুটি গ্রুপ আলাদা আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়।
অভিযোগ রয়েছে, চর দখলে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার, বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ। তারা কোপা সামছু বানিহীকে চর থেকে বিতাড়িত করে চরের জমি দখলে নিতে আলাউদ্দিন বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে। এ নিয়ে দুটি গ্রুপ একাধিকবার বিরোধে জড়ায়।
মঙ্গলবার সকাল (১০)টার দিকে চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে ‘বন্দুক যুদ্ধে লিপ্ত’ হয়। এতে অপর পক্ষের ছোড়া গুলিতে আলাউদ্দিনসহ ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। বাকি ৪ জনের মরদেহ ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিমের মোবাইল ফোনে একাধিক কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, ‘একটি মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। (৪)টি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এলাকায় থমথমে অবস্থান বিরাজ করছে।
রপান্তর বাংলা অনিয়মের বিরুদ্ধে, সত্যের পক্ষে
